প্রতিবেদন: ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্য বিজেপি-শাসিত ওড়িশার বাজারে। বেসামাল প্রশাসন। সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। ডানার দাপট থেকে বাঁচাতে ওড়িশার ১৪টি জেলার ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ জায়গায়। এদিকে ভক্তদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুরীর জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দিরে। পুজো-আর্চার জন্য মন্দিরের দ্বার যথারীতি খোলা থাকলেও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে দর্শনার্থীদের প্রবেশ। আপাতত বন্ধ কোনারকের সূর্য মন্দিরও। জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। শুধু মানুষ নয়, বন্যপ্রাণকে রক্ষা করতেও ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূলের জেলাগুলোতে।
আরও পড়ুন-শুধুই ফাঁকা আওয়াজ মোদির, কেন্দ্রের ১০ লক্ষ পদ এখনও শূন্যই
২৪ এবং ২৫ অক্টোবর বন্ধ রাখা হচ্ছে ভুবনেশ্বরের নন্দনকানন। ২৩ থেকে ২৫ তারিখ অবধি দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ এবং ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যানে। কিন্তু সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় সেভাবে আছড়ে পড়ার আগেই বাজারে যেভাবে জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে, তাতে রাজ্যে নয়া বিজেপি সরকারের অপদার্থতাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মানুষের আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে সবজি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের ব্যাপক কালোবাজারি। সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসাধু মজুতদার এবং ব্যবসায়ীচক্র। আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসন সব দেখেও কার্যত নীরব। সবকিছু দেখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন বিজেডি সুপ্রিমো রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
আরও পড়ুন-দেশের পরিবেশ আইন আসলে দন্তহীন, দিল্লির দূষণ নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের
আসলে ১৯৯৯-এর সুপার সাইক্লোন বা মহাবাত্যার ভয়ঙ্কর স্মৃতি আজও রাজ্যের মানুষের স্মৃতিতে দগদগে ঘায়ের মতো। নবীন পট্টনায়ক তখন কেন্দ্রের মন্ত্রী। সেই মহাবাত্যা শুধু প্রাণই কাড়েনি অজস্র মানুষের, তছনছ করে দিয়েছিল উপকূলবর্তী জেলাগুলোকে। এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মাসকয়েকের মধ্যেই পালাবদল ঘটে ওড়িশায়। বিজেডি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী হন নবীন। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করেই জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। লক্ষণীয় সেবারের ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ওড়িশার বিশেষ আকর্ষণ নন্দনকাননও। সবুজের বুকে বিস্তীর্ণ এই চিড়িয়াখানা থেকে নিখোঁজ হয়েছিল বেশ কিছু সিংহ,বাঘ এবং অন্যান্য বন্যজন্তু। আশঙ্কা করা হয়েছিল তারা ঢুকে পড়েছে শহরে। তাই এবারে আর কোনও ঝুঁকি নিচ্ছে না বন দফতর।
শুধু পুরীর সমুদ্রসৈকত নয়, পর্যটকশূন্য করে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণের গঞ্জাম জেলার গোপালপুরের সৈকত এবং উত্তরে বালেশ্বরের চাঁদিপুর সৈকতও।