সন্ত্রাসে রক্তাক্ত মণিপুর

উল্লেখ্য, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কয়েক দশক ধরেই আঞ্চলিক জঙ্গিগোষ্ঠী যথেষ্ট সক্রিয়।

Must read

প্রতিবেদন : কাশ্মীর নয়, মণিপুর৷ জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত৷ আবারও সেনা এবং নিরীহ মানুষের মত্যু৷ প্রশ্ন দেশ জুড়ে সর্বত্র৷

অসম রাইফেলসের কনভয়ে জঙ্গি হামলায় শনিবার সাতজনের মৃত্যু হল। মৃতদের মধ্যে আছেন সেনাবাহিনীর এক কর্নেল, তাঁর স্ত্রী ও নাবালক সন্তান। কর্নেলের পরিবার ছাড়াও আরও চার জওয়ান শহিদ হয়েছেন। গত কয়েক দশকের মধ্যে মণিপুরে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা। মণিপুরের এই জঙ্গি হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জঘন্য ঘটনার বিচার চাইছেন দেশের মানুষ৷

আরও পড়ুন-Tathagata Roy: বিস্ফোরক তথাগত, বিজেপির আত্মহত্যার খবর প্রকাশ্যে আসছে

শনিবার মণিপুরের মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা চূড়াচাঁদপুরে সেনাবাহিনীর কনভয়ে হঠাৎই জঙ্গিরা হামলা চালায়। শনিবার চূড়াচাঁদপুর এলাকায় কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী ঘন জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থেকে কনভয় লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪৬ অসম রাইফেলসের কনভয়ে জঙ্গি হামলা হয়েছে।

জঙ্গিরা জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে কনভয় লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এই হামলায় কমান্ডিং অফিসার কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠী, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এদিন কর্নেলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন কুইক রেসপন্স টিমের কয়েকজন সদস্য। ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আরও পড়ুন-ফের সিবিআই বনাম সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বিস্ফোরক চিঠি, ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ আধিকারিকের

শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে, রাজ্য পুলিশের আশঙ্কা, মণিপুর পিপলস লিবারেশন আর্মি এই হামলা করেছে।
রাজধানী ইম্ফল থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে মায়ানমারের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত যে গ্রামে হামলা হয়েছে সেই জায়গাটি ঘন জঙ্গলে ঘেরা। তাই হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা সহজেই সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমারে চলে গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-Election Survey: সমীক্ষা বলছে, আগামী বছর পাঁচ রাজ্যের ভোটে অস্বস্তিতে বিজেপি

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এই হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই ঘটনার নিন্দা করে জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন ট্যুইট করেন, ‘সেনা জওয়ানদের উপর যে ঘৃণ্য হামলা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। জঙ্গিদের খোঁজে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী জঙ্গলের মধ্যে তল্লাশি চালাতে শুরু করেছে। হামলাকারীরা কেউ পার পাবে না।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথও এদিনের হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।

আরও পড়ুন-Child Diabetes: শিশুদের ডায়াবেটিস নিয়ে আরও একটু সচেতন হই

উল্লেখ্য, জঙ্গিরা এর আগেও মণিপুরে সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর কোনও সদস্যের পরিবারের উপর হামলা এই প্রথম। পাশাপাশি এদিনের ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, স্থানীয় জঙ্গি অধ্যুষিত সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্নেল সপরিবার কেন গিয়েছিলেন? যদিও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনও মুখ খোলা হয়নি। অসম পুলিশও এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

উল্লেখ্য, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কয়েক দশক ধরেই আঞ্চলিক জঙ্গিগোষ্ঠী যথেষ্ট সক্রিয়। প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকেও সীমান্ত পেরিয়ে বহু যুবক জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিচ্ছে। এই সমস্ত অঞ্চলিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে তলে তলে পাকিস্তান ও চিন মদত দিচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

Latest article