প্রতিবেদন : নিম্ন আদালত শুনিয়েছিল ফাঁসির সাজা। শেষমেশ হাইকোর্টে তা রদ হয়ে গেল। ২০০৬ সালের আলোড়ন সৃষ্টিকারী নিঠারি হত্যা মামলায় (Nithari killings) দুই মূল অভিযুক্ত সুরিন্দর কোহলি এবং মণীন্দর সিং পান্ধেরকে বেকসুর খালাস করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত সূত্রের খবর, সুরিন্দরকে ১২টি মামলায় এবং মণীন্দরকে দু’টি মামলায় বেকসুর ঘোষণা করেছে উচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে, নিম্ন আদালতে তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজাও রদ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। জানা গিয়েছে, সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে এমন নির্দেশ। প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিমবঙ্গের কামদুনি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যারা পথে নামলেন, তাঁরা এবার যোগীরাজ্যের হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলবেন?
আরও পড়ুন- উইকএন্ডেই সারা ফিলাডেলফিয়ার দুর্গাপুজো
কী ছিল নিঠারিকাণ্ড (Nithari killings)? ২০০৫ ও ২০০৬ সালে নয়ডায় একের পর এক শিশু, কিশোর- কিশোরী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হতে শুরু করে। পরে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা। নিঠারির ব্যবসায়ী মণীন্দর সিং পান্ধেরের বাড়ি থেকে মেলে ১৯টি কঙ্কাল। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে মৃত ১৯ জনের মধ্যে রয়েছে একাধিক শিশু ও তরুণী। জানা যায়, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাদের। তারপর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে প্রেসারকুকারে সেদ্ধ করে খাওয়ার অভিযোগ ওঠে মণীন্দরের বিরুদ্ধে। হাড়হিম করা এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনায় মণীন্দরের সহকারী ছিল তারই বাড়ির পরিচারক সুরিন্দর কোলি। পান্ধেরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালগুলির মধ্যে একটি ছিল বাঙালি তরুণী পিঙ্কি সরকারের। অভিযোগ ছিল, যৌন নির্যাতনের পরে খুন করা হয় তাঁকে। এরপরই পুলিশ পান্ধের ও কোহলিকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। নিঠারিকাণ্ডে ১৯টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে ৩টি মামলা প্রমাণের অভাবে বাতিল হয়ে যায়। বাকি ১৬টি মামলার মধ্যে ৭টি মামলায় দুই অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিলেন সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারক পবন তিওয়ারি। এরপরই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টে যায় নিঠারি কাণ্ডের দুই অভিযুক্তই। সাজা মুকুবের আবেদন জানায় তারা। সোমবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট সুরিন্দরকে ১২টি ও মণীন্দরকে দুটি মামলায় বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে। সেইসঙ্গে ফাঁসির সাজা রদ হয়ে গিয়েছে।