প্রতিবেদন: বন্যায় ভাসছে উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসম। স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। শুক্রবারও বিভিন্ন জেলার আরও আটজন প্রাণ হারিয়েছেন। এই অবস্থায় এখনও পর্যন্ত অসমে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ৯০। বন্যার পাশাপাশি ভূমিধস ও ঝড়ে একাধিক মানুষ ও গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও বেশ কিছু জায়গায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্রের জল।
আরও পড়ুন-পরপর বিপত্তি! এবার লক্ষাধিক টাকার মহাপ্রসাদ নষ্টের অভিযোগ সেবায়েতের
অসমের বন্যায় বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৮টি জেলার ২২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। যার মধ্যে শুধুমাত্র ধুবড়ি জেলাতেই ক্ষতির মুখে সাড়ে সাত লক্ষের বেশি মানুষ। অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) জানিয়েছে, সর্বশেষ যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ধুবড়ি এবং নলবাড়ি থেকে দু’জন করে এবং কাছাড়, গোয়ালপাড়া, ধেমাজি ও শিবসাগর থেকে একটি করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবমিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসমের ২৮টি জেলার ৩,৪৪৬টি গ্রামের ২২ লক্ষ ৭৪ হাজার ২৮৯ জন মানুষ। ধুবড়ি পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাছাড় জেলা। এই জেলায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯২৮ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরেই রয়েছে বারপেটা জেলা। এখানে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩২৮ জন মানুষ ক্ষতির মুখে।
আরও পড়ুন-অগ্নিগর্ভ ধলাই, পঞ্চায়েত ভোটের আগে অশান্ত ত্রিপুরা
এএসডিএমএ-র রিপোর্ট বলছে, শুক্রবার অসমের গোয়ালপাড়া জেলায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। তাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নগাঁও এবং জোড়হাটে বন্যার জলে ডুবে একজন করে মারা গিয়েছেন। এর ফলে বিপর্যয়কালীন মোট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৯০-তে। অসমের যে জেলাগুলি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে কাছার, ধুবড়ি, নগাঁও, ডিব্রুগড়, কামরূপ, গোলাঘাট, জোরহাট, মরিগাঁও, লখিমপুর, করিমগঞ্জ, দারাং, মাজুলি, তিনসুকিয়া অন্যতম। অসমে এখন প্রায় তিন লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। রাজ্যের ৩১৬টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। বন্যায় বিপাকে
পড়েছে রাজ্যের সাড়ে ছ’লক্ষের বেশি পশু। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব বিরোধীরা। সরকারের কাছে আরও ব্যাপক ত্রাণ পাঠানোর দাবি তুলছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন।