প্রতিবেদন : যাদবপুরে যেন বাংলাদেশের ছোঁয়া না লাগে! কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে এমনই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। একইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় গোয়েন্দাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। যেভাবে অধ্যাপক সংগঠনের ঘোষিত অনুষ্ঠানে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পনামাফিক হামলা চালানো হয়, তাতে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়ে ফাঁক থেকে গিয়েছে বলে মন্তব্য বিচারপতির। গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা নিয়ে আগামী ১২ মার্চের মধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের এজলাসে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করল না আদালত।
আরও পড়ুন-সেবাশ্রয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহেশতলায় আপ্লুত আট থেকে আশি
খারিজ করে দেওয়া হয়েছে দ্রুত শুনানির আর্জিও। রাজ্যের উপর আস্থা রেখে প্রধান বিচারপতির সাফ বক্তব্য, আইন-শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের। রাজ্য পুলিশই সবটা সামলাবে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। এখানে আদালতের কিছু করার নেই। বুধবার যাদবপুর-কাণ্ডে পড়ুয়াদের তরফে দায়ের করা মামলায় বিচারপতি তীর্থাঙ্কর ঘোষ শিক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শনিবার কেন মন্ত্রীর সঙ্গে সাদা পোশাকের পুলিশ ছিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে উল্লেখ করেছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রসঙ্গ। এই নিয়ে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, আদালত ঠিকই বলেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিশ্চিতভাবে একটা দেশবিরোধী শক্তি কাজ করছে। দেশের জাতীয় পতাকা খুলে নেওয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে এইটুকু স্পষ্ট যে, স্বাধীন ভারত এবং রাষ্ট্রের উপর তাঁদের আস্থা নেই। বাংলাদেশ থেকে যাদবপুরের এইসব দেশবিরোধী বিশৃঙ্খলাকারীদের পক্ষে সমর্থন আসছে! তাই আদালতের এই মন্তব্যকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থাঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ মার্চ।
আরও পড়ুন-ভারতের উপর শুল্ক ধার্য করার দিন ও হার ঘোষণা ট্রাম্পের
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এখনও ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধ্য অবস্থান চলছে। উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বৈঠকে বসার জন্য কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছে পড়ুয়ারা। সময়ের মধ্যে কথা না বললে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে কিন্তু গত শনিবার ওয়েবকুপার সম্মেলনে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিকল্পিত হামলার পর থেকেই কার্যত শয্যাশায়ী উপাচার্য। পড়ুয়াদের ক্রমাগত চাপে বেড়েছে তাঁর রক্তচাপও। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে তাঁকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন। এদিন তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তা সত্ত্বেও উপাচার্যকে পড়ুয়াদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে ক্ষমা চাওয়ার বায়না ধরেছে পড়ুয়ারা।