অনুরাধা রায় : প্রসবযন্ত্রণায় ছটফট করছেন মহিলা। মেয়ের কষ্ট দেখে কাতর আর্তি মায়ের। সীমান্তরক্ষীদের হাতে-পায়ে ধরছেন। এবার ছেড়ে দিন। ভুটভুটির চালকও বলছেন স্যার ছেড়ে দিন। তবুও চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। হাজার অনুরোধের পরেও সেদিন রাস্তা ছাড়েনি বিএসএফ। ভুটভুটিতেই সন্তানের জন্ম দেন প্রসূতি। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের প্রচেষ্টায় কোনওক্রমে প্রাণবাঁচে মা ও সদ্যোজাতের। এই কথা বলতে বলতেই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন ফাঁসিদেওয়ার বাসিন্দা আমিনা বিবি।
আরও পড়ুন : জোর কদমে লাল বলের প্রস্তুতি শুরু ভারত নিউজিল্যান্ডের
এমন বুকফাটা কান্নার শব্দ শোনা যায় সীমান্তের ইতিউতি। কেউ কাঁদছেন পেটের জ্বালায়। বিএসএফের শাস্তি জমিতে যাওয়া যাবে না। কেউ কাঁদছেন স্বজন হারিয়ে। ওপারের জমিতে কাজ করে ফিরছেন ক্লান্ত চাষি। অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। পাচারকারী সন্দেহে চলল বিএসএফের গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ল চাষির দেহ। এমন ঘটনাও বহু ঘটেছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় বিএসএফের গুলিতে এভাবে নির্দোষ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। কখনও চলন্ত বাসে উঠে, কখনও সীমান্ত লাগোয়া বাড়িতে ঢুকে শাসায় বিএসএফ। এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন উত্তর দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা। হেমতাবাদ ব্লকের চৈনগর, বিষ্ণুপুর এবং নওদা পঞ্চায়েতের সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা দিয়ে কাঁটাতার রয়েছে। ওপারে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা অনেক কৃষিজমি ভারতীয়ের। এপারের বাসিন্দারা ওইসব কৃষিজমির মালিক। এক্ষেত্রে বিএসএফকে চটালে সীমান্তের বাসিন্দাদের সমস্য বাড়বে। তাই পেটের দায়ে কষ্ট সয়ে চুপ করে থাকতে বাধ্য হন সীমান্তবাসীরা। এর সুরাহা কবে হবে? একটায় প্রশ্ন তাঁদের।