মানস দাস,মালদহ : বেলাশিয়া চৌধুরি, লড়িকরাম চৌধুরি— এরা প্রত্যেকেই হবিবপুর ব্লকের ফলিমারি এলাকার বাসিন্দা। পেশায় কেউ কৃষিজীবী, আবার কেউ মৎস্যজীবী। এই পেশার ওপর নির্ভর করেই বেঁচে থাকেন এই গ্রামের মানুষজন। কিন্তু বাধ সেধেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। আর এই জাঁতাকলে পড়েই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ফলিমারি গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন। নিজের জমি চাষ করতেও লাগে বিএসএফএর অনুমতি। এলাকার বেশিরভাগ মানুষের কৃষি জমি কাঁটাতার বেড়ার ওপারে। বিএসএফ কখনও পরিচয়পত্র দেখতে চেয়ে হয়রানি করে, কখনও মারধর শুরু করে। নির্দিষ্ট সময়ে জমি চাষ শেষ না হলে ওপারেই আটকে থাকতে হয় বহুক্ষণ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে পিছপা হন না। তাই নিজ ভিটে জমি থেকেও বিএসএফএর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ফলিমারিবাসী।
আরও পড়ুন : Biplab Dev: বিপ্লব দেবের OSD-কে তলব কলকাতা পুলিশের
বিএসএফের বিরুদ্ধে এসব নানান অভিযোগের স্তূপ জমা হয়েছে মানুষের মনে। অথচ সীমান্ত এলাকার মানুষজনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করেছেন কেন্দ্র সরকার। নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার করতেই অভ্যস্ত বিএসএফ। একটিই বাহানা— চোরাচালান। কিন্তু ফলিমারি গ্রামটির ভৌগোলিক অবস্থান এমন যে একদিকে বয়ে গিয়েছে মহানন্দা, তার পাশেই ৮ ফিটের কাঁটাতারের বেড়া। ওপরদিকে চব্বিশ ঘণ্টা বিএসএফের টহলদারি। গবাদি পশু ওপারে গেলেই মহাবিপদ। মালিক কে ডেকে চালায় অত্যাচার। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকা থেকে ৫০ কিমি পর্যন্ত বেড়েছে বিএসএফের সীমানা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতি নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে দেশ জুড়ে। চলছে লাগাতার বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচি। পূর্বেই লড়িকরাম বেলাশিয়ারা যেভাবে বিএসএফের অত্যাচার সহ্য করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া নীতি প্রয়োগের ফলে আরও বেশি করে তাঁদের জীবনে নেমে আসছে গাঢ় অন্ধকার।