প্রতিবেদন : চোপড়ায় মর্মান্তিক ঘটনার নেপথ্যেও যে আসলে বিজেপিই, তা বেআব্রু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় তিনি সরাসরি জানিয়ে দিলেন, আসলে বিজেপির হয়েই ক্যাম্প চালাচ্ছে বিএসএফ। কিন্তু সেই অধিকার কে দিয়েছে তাদের? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে পালন না করে তারা আসলে বিজেপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
চোপড়ায় বিএসএফের গাফিলতিতে মাটি ধসে চার শিশুর মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই শিশুদের পরিবারের পাশে থেকে টানা ধরনা-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবারও একই ভাবে আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় তীব্র ক্ষোভ এবং গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দোষী বিএসএফের জওয়ানদের কড়া শাস্তি চাই। বিএসএফ যা খুশি তাই করছে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির হয়ে ক্যাম্প চালাচ্ছে। এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে! ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহে বুধবার রাতেই চেতনাগছ গ্রামে রাজ্য চাইল্ড কমিশনের প্রতিনিধি দল আসে। তাঁরা কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। বৈঠক করেন বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে। অবশেষে আন্দোলনের ফলে নিজেদের গাফিলতি স্বীকার করে বিএসএফ। বৈঠকে বিএসএফ কর্তারা রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদের জানান, তাঁদের তরফে আরও সতর্কতা অবলম্বন করলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস জানান, মূলত কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিএসএফ আধিকারিকদের প্রশ্ন করা হয় যার সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন-ছাড়িগঙ্গায় কমছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা, উদ্বিগ্ন প্রশাসন
১৫ ফুটের মধ্যে জনবসতি থাকা সত্ত্বেও কেন বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করা হল না। এত বড় কাজ চলাকালীন কেন গ্রামবাসীদের আগাম প্রচার করে জানানো হল না, কাজ শুরুর আগেই কেন এলাকা ঘিরে ফেলা হল না। অন্যদিকে এই ঘটনায় মৃত শিশুদের পরিবারকে কেন্দ্রের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলে রাজ্য প্রতিনিধি দল। এই পরিবারগুলির মধ্যে এক দম্পতির একমাত্র ছেলেও মারা গিয়েছে যার বয়স মাত্র ৫। আর সেই দম্পতির আগামীতে কোনও সন্তান হওয়া সম্ভব নয়। এই অপূরণীয় ক্ষতির কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। কেন্দ্রের তরফে এই পরিবারগুলিকে সহায়তা করার দাবি তোলেন তাঁরা। অন্যদিকে এই দুর্ঘটনার খবর গ্রামেরই একটি ছোট্ট মেয়ে তৎপরতার সঙ্গে পৌঁছে দিয়ে শিশুদের প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেছিল। লায়লা বানু নামে সেই ছোট্ট মেয়েটিকে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বীরাঙ্গনা সম্মান দেওয়া হবে বলেও জানায় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন।