মিতা নন্দী, ঝাড়গ্রাম: করোনার বাড়বাড়ন্ত এবং খারাপ আবহাওয়ায় পৌষ সংক্রান্তির দিন প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বুলবুল পাখির লড়াই বন্ধ হয়ে গেলেও, পরদিন আবহাওয়া কিছুটা ভালো হতে তা আয়োজিত হল। গোপীবল্লভপুরে রাধাগোবিন্দ মন্দির সংলগ্ন প্রাঙ্গণে। প্রায় ৪০০ বছর ধরে মকর সংক্রান্তির দিন হয়ে আসছে এই বিরল পাখি–লড়াই। দূর দুরান্ত থেকে দেখতে আসেন মানুষ। গতকাল তাঁরা বিফল হয়ে ফিরে গেলেও এদিন অনেকেই উপভোগ করেন বুলবুলের লড়াই।
আরও পড়ুন-এভাবেও পাশে থাকা যায় দেখিয়ে দিল যুব তৃণমূল
বাংলার সীমান্ত জেলা ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে হয় এই বুলবুল পাখির লড়াই। কলকাতায় উনিশ শতকের বাবুরা একসময় এই বুলবুল পাখির লড়াইয়ের আসর বসাতেন যেখানে মিনার্ভা থিয়েটার ছিল, তার লাগোয়া ময়দানে। বাবুদের দিন যাওয়ার পর সেসব কালের নিয়মে হারিয়েই যায় কলকাতার বুক থেকে। কিন্তু এই বাংলার গোপীবল্লভপুরে পৌষ সংক্রান্তির দুপুরে এখনও এই পাখির লড়াই হয়। যাঁরা লড়াই লাগান তাঁরা কেউ বাবু নন, সব খেটে খাওয়া মানুষ। বুলবুল পাখির লড়াই এখন গোপীবল্লভপুরে লোকসংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে। মূলত গোপীবল্লভপুরের দুটি পাড়ার মধ্যে হয় পাখির লড়াই। দক্ষিণ সাই ও বাজার সাই–এর মধ্যে। সাই অর্থাৎ পাড়া।
আরও পড়ুন-মহানিষ্ক্রমণ
বাজারপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার আগ্রহী মানুষজন (স্থানীয় ভাষায় হাউসি) লড়াইয়ে যোগ দেন। অভুক্ত পাখিকে এক টুকরো কলা দেখিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে ছেড়ে দেওয়া হয়। লড়াই হয় দুটি পাড়ার প্রতিদ্বন্দ্বী পাখির মধ্যে।খাবারের তাগিতেই চলতে থাকে লড়াই। প্রায় ৪০০ বছর ধরে মকর সংক্রান্তির দিন মন্দিরচত্বরে হয়ে আসছে এই বুলবুলির লড়াই।