বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: চারিদিকে সবুজে ঘেরা প্রকৃতি। খেলছে পাহাড়। শিরশিরে হালকা বাতাস আর প্লেটে নরম তুলতুলে মোমো। তাও আবার স্বাস্থ্যকর! নেই ময়দা, অথচ সুস্বাদু। স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয়। বেড়াতে এসে আপনি নিশ্চিন্তে দেদার স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াই। ভেবে অবাক হচ্ছেন যে, ফাস্টফুড খাওয়া স্বাস্থ্যহানি তো নয়ই, উপরন্তু পুষ্টি জোগাবে শরীরে, এটা কীভাবে সম্ভব? এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে রাজ্য কৃষি দফতরের আলিপুরদুয়ার জেলার কৃষি আধিকারিকগণ ও বক্সা পাহাড়ের মহিলা পরিচালিত প্রিয়া স্বনির্ভর গোষ্ঠী। রাজ্য কৃষি দফতরের সাহায্যে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকে কৃষি দফতরের উদ্যোগে বিপুল পরিমাণে মিলেট চাষ হচ্ছে। আগেও এই এলাকায় মিলেট চাষ হত।
আরও পড়ুন-হাইকোর্টের রায় বিপাকে অর্জুন
কিন্তু বিপণনের সমস্যায় তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এবার রাজ্য কৃষি দফতর কালচিনি ব্লকের বক্সা পাহাড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় মিলেট চাষে জোর দিয়েছে। কৃষকদের নতুন করে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে, বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে এই মুহূর্তে প্রায় ৩৫০ একর জমিতে মিলেট চাষ করিয়েছে। এবং এই বিপুল পরিমাণ মিলেটের বিপণনের জন্য বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি অবলম্বন করছে। তারই একটি হচ্ছে বক্সা পাহাড়ের সান্তলা বাড়িতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সহায়তায় মিলেট ওয়েলনেস স্টোর চালু করা। এই ওয়েলনেস স্টোর তৈরি করতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আত্মা প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। ওই স্টোরেই মিলছে মিলেটের তৈরি নানান সুস্বাদু ফাস্টফুড। এই বিষয়ে প্রিয়া স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রী সুখমতি ঘিসিং জানান, ‘‘মিলেটের তৈরি ডার্ক ব্রাউন মোমো খুব জনপ্রিয় হচ্ছে পর্যটকদের কাছে। প্রতিদিন এর চাহিদা বাড়ছে। এ ছাড়াও সেলরুটি, নুডুলস, পাস্তাও ভাল বিক্রি হচ্ছে। এমনকী ড্রাই মোমো প্যাকেট করে নিয়েও যাচ্ছেন পর্যটকরা। আমাদের আয়ের পথ সুগম হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ মহকুমা কৃষি অধিকর্তা রজত চট্টোপাধ্যায় জানান, কালচিনি ব্লকে নতুন করে মিলেট চাষ শুরু করা হয়েছে রাজ্য সরকারের সহায়তায়। মিলেটের প্রচুর খাদ্যগুণ রয়েছে। স্থানীয় খাবারের মাধ্যমে পর্যটকরা মিলেট সানন্দে গ্রহণ করছেন। আগামী দিনে মিলেটের ব্যবহার বাড়লে কৃষকরা লাভবান হবেন।

