প্রতিবেদন : গঙ্গায় ডুব দিলে সেরে যাবে ক্যানসার! এমন ভয়ঙ্কর অন্ধ বিশ্বাসে ভর করে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শিশুকে ডোবানো হয়েছিল গঙ্গায়। তবে অসুস্থ অবস্থায় গঙ্গার হাড়হিম ঠান্ডাজলে দীর্ঘক্ষণ ডুবিয়ে রাখায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল শিশুর। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের ‘হর কি পৌড়ি’ ঘাটে। মর্মান্তিক এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন-পদ্মশ্রী পেলেন বাংলার চার কৃতী
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলা এক মিনিটেরও বেশি সময় ধরে জলে ডুবিয়ে রেখেছেন ছেলেটিকে। এই ঘটনা দেখে ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবক নদী থেকে টেনে তোলে শিশুটিকে। জল থেকে টেনে তোলার সময় ওই যুবকের সঙ্গে হাতাহাতিও হয় মহিলার। সূত্রের খবর, কিছু লোক শিশুটিকে উদ্ধারের আগেই তাকে প্রায় তিন থেকে চার মিনিট জলের নিচে রাখা হয়েছিল। তার ফলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় শিশুটির। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই মহিলা ছেলেটিকে নিয়ে ঘাটে বসে আছেন এবং হেসে হেসে বলছেন “ইয়ে বাচ্চা খাড়া হোগা ইয়ে মেরা বচন হ্যায়, মেরি গঙ্গা মাইয়া কা বচন হ্যায় (এই ছেলে উঠে দাঁড়াবে । এটা আমার প্রতিশ্রুতি এবং আমার গঙ্গা মায়ের প্রতিশ্রুতি)।
মর্মান্তিক এই ঘটনা সম্পর্কে হরিদ্বারের অতিরিক্ত এসপি স্বতন্ত্র সিং বলেন, ওই পরিবার দিল্লির বাসিন্দা। ৫ বছরের ওই শিশুটি রক্ত ও হাড়ের ক্যানসারে ভুগছিল। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, ছেলেটিকে বাঁচানো যাবে না। শেষ বিকল্প হিসাবে অন্ধ বিশ্বাসে ভর করে শিশুটির পরিবার তাকে হরিদ্বারে নিয়ে আসে। তবে মনে হচ্ছে, ছেলেটিকে এখানে আনার সময়েই সে মারা গিয়েছিল। আমরা পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি এবং এর ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের দণ্ডসংহিতা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ বিচারপতি
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে তাদের এখনও আটক করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় দিল্লি থেকে ওই পরিবার যে গাড়ি ভাড়া করে আনে তার ড্রাইভারও দাবি করে যে ছেলেটি সম্ভবত পথে মারা গিয়েছিল। চালক বলেছেন, ওই পরিবারকে নিয়ে গঙ্গা দর্শনের জন্য আমরা সকালেই দিল্লি থেকে রওনা দিই। গাড়িতে শিশুটির বাবা-মা সহ পাঁচজন ছিলেন। পরিবারের সদস্যের কোলে কম্বলে জড়ানো ছিল শিশুটি। অন্ধ বিশ্বাসের পরিণতি কী হতে পারে একবিংশ শতকে তা দেখল দেশ।