কাল মনোনয়ন পেশ প্রার্থীদের

রাজ্যসভায় ছয় প্রার্থী তৃণমূলের

Must read

প্রতিবেদন : তিন পুরনো মুখ ও তিন নতুন মুখের সমন্বয় রেখে সোমবার রাজ্যসভা (Rajya Sabha- Polls) নির্বাচনে ৬টি আসনে প্রার্থী-তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সকালে ট্যুইটের মাধ্যমে এই তালিকা ঘোষণা করা হয়। সুখেন্দুশেখর রায়, ডেরেক ও’ ব্রায়েন, দোলা সেন আগে থেকেই তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ছিলেন। এই তিনজন ফের মনোনয়ন পেলেন। এবার নতুন মুখ হিসাবে দেখা গেল সামিরুল ইসলাম, প্রকাশচিক বরাইক, সাকেত গোখেলকে। সুখেন্দুশেখর রায় জানালেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেডি করে আগামী বুধবার বিধানসভায় মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। প্রার্থী ঘোষণার পর দোলা সেনও প্রয়োজনীয় কাজ সারতে দিল্লি চলে গিয়েছেন। তিনিও বুধবার মনোনয়ন জমা দেবেন। সাকেত-সামিরুল-প্রকাশচিকরাও সবাই বুধবার ১২ জুলাই মনোনয়ন জমা দেবেন। ডেপুটি চিফ হুইপ তাপস রায়, মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়দের তত্ত্বাবধানে চলবে মনোনয়ন।
নাম ঘোষণার পরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সকলে।

সুখেন্দুশেখর রায় : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা বোঝা যায় ছয় জনের নাম থেকেই। যেখানে প্রবীণ রাজনীতিবিদদের বিচক্ষণতার সঙ্গে নবীনদেরও সুযোগ দিয়েছেন। যিনি নর্থবেঙ্গল থেকে এসেছেন তাঁকে দেখে বোঝা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সত্যিই মা-মাটি-মানুষের সরকার।

ডেরেক ও’ব্রায়েন : এমন দিনগুলিতে অনেক স্মৃতি মনে ভিড় করে আসে। মনে পড়ে সেই ২০ বছর আগে এক ডিসেম্বরের রাতের কথা। যখন (প্রয়াত) গৌতম বসু আমাকে প্রথমবার মমতাদির সঙ্গে দেখা করতে তৃণমূল ভবনে নিয়ে গিয়েছিলেন রাত ১০টায়। ২০০৫ সালের কেএমসি নির্বাচনে, সিঙ্গুর হাইওয়েতে প্রতিবাদের সময়ে যখন দল আমাকে প্রথম টিভিতে বলতে পাঠায়, পার্ক স্ট্রিটে রিজওয়ানুরের ঘটনায় আন্দোলনের সময়ে, ২৬ দিনের অনশনের সময়ে, হাজার হাজার স্মৃতি। একজন মহিলার কঠিন সংগ্রামের জীবন সম্ভব করেছে আমাদের মতো মানুষদের সেবা করার সুযোগ করে দিয়ে।

দোলা সেন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক ধন্যবাদ আমার প্রতি আস্থা রাখার জন্য। পরপর তিনবার রাজ্যসভায় সুযোগ পাওয়া এত সহজ নয়।

প্রকাশচিক বরাইক : দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপর আস্থা রক্ষায় আমি কৃতজ্ঞ। সবার উন্নয়নে আগামী দিনে কাজ করতে চাই।

আরও পড়ুন-হিন্ডেনবার্গের ছোঁয়ায় ছয় মাসে চার লাখ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে আদানি

সাকেত গোখেল : এটা আমার কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ডেরেক ও’ব্রায়ানের কাছ থেকেও আমার অনেক কিছু শেখার আছে, উনি আমার মেন্টর।

সামিরুল ইসলাম : দায়িত্ব বেড়ে গেল। আমি আগেও গণসংগঠনের কাজ করেছি এবার আরও বেশি করে করতে পারব। দিদি, আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমাদের দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ আমাকে এত বড় একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য।
রাজ্যসভায় বাংলা থেকে ৭টি আসন শূন্য হয়েছে। ৬ জুলাই নির্বাচন কমিশন তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ১৩ জুলাই শেষ দিন। সেই কারণে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি রবিবার বিধানসভায় দলীয় বিধায়কদের ডেকে তাঁদের দিয়ে ফর্মে সই করিয়ে রেখেছেন। বিধায়কেরা প্রস্তাবক হিসেবে সই-সাবুদ সেরে রেখেছেন।

তৃণমূল কংগ্রেস ট্যুইটবার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছে রাজ্যসভা ভোটের প্রার্থীদের। সেখানে লেখা হয়েছে, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ডেরেক ও’ব্রায়ান, দোলা সেন, সুখেন্দুশেখর রায়, সামিরুল ইসলাম, প্রকাশচিক বরাইক, সাকেত গোখেল আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তাঁরা যেন জনগণের সেবা করার জন্য তাঁদের নিবেদনে অটল থাকেন এবং তৃণমূলের অদম্য চেতনার স্থায়ী উত্তরাধিকার এবং প্রত্যেক ভারতীয়ের অধিকারের পক্ষে ওকালতি করেন। আমরা সবাইকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যসভার জন্য সেরা প্রার্থী-তালিকা ঘোষণা করেছে দল। তিনজন নতুন মুখ রয়েছেন। ভারসাম্য বজায় রেখেই তালিকা তৈরি হয়েছে। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সমাজের সব অংশের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকেও প্রতিনিধি রয়েছেন। আর যে সাকেত গোখেলকে বিজেপি চূড়ান্ত হেনস্থা করেছে, জেলে পাঠিয়েছে, আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করল।

এর আগে গোয়া থেকে লুইজিনো ফেলোরিও, পাহাড় থেকে শান্তা ছেত্রি ও সুস্মিতা দেবকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল দল। লুই ফেলোরিও আগেই ইস্তফা দিয়েছেন। শান্তা ছেত্রি ও সুস্মিতা দেব মনোনয়ন না পেলেও দল তাঁদের অন্য কাজে লাগাবে। রাজ্যসভার নির্বাচনে (Rajya Sabha- Polls) ৬টি আসনেই তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। ফেলোরিও-র আসনে উপ-নির্বাচন হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আবহেই রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় রাজৈনতিক মহলে তা চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। রাত পোহালেই পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরোবে। আর তার পর দিন বুধবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা সরগরম থাকবে তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে। আগামী ২৪ জুলাই রাজ্যসভার নির্বাচন। তৃণমূল কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত ধরেই রাজনৈতিক মহল নজর রাখছে এ রাজ্যে অন্য দল থেকে রাজ্যসভায় কারা প্রার্থী হচ্ছে। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েতের অঙ্ক মিটতে না মিটতেই রাজ্যসভার জন্য অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গেল।

Latest article