প্রতিবেদন: মানবিক আবেদন, বাস্তবসম্মত যুক্তি। কর্মরত অবস্থায় সেনাবাহিনীর জওয়ান কিংবা অফিসারের মৃত্যু হলে তাঁর স্ত্রী-সন্তানের পাশাপাশি বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কথাও বিবেচনা করা হোক। ভাবা হোক তাঁদের আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কথা। তা না হলে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে পড়তে হতে পারে তাঁদের। এরজন্য নেক্সট অফ কিন বা নমিনির নিয়মেও বদল আনা হোক। এই দাবি তুলেছেন সিয়াচেনে নিহত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের (Anshuman singh) বাবা-মা। কিছুদিন আগে সিয়াচেনে এক অগ্নিকাণ্ডে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন ক্যাপ্টেন অংশুমান। মরণোত্তর কীর্তিচক্র সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। বীরত্বের স্বীকৃতি হিসাবে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান এই কীর্তিচক্র। বাবা রবি প্রতাপ সিং এবং মা মঞ্জু সিংয়ের যুক্তি, উত্তরাধিকার মনোনয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র নিয়মকানুনে বদল আনলে সন্তানের অকাল মৃত্যুর ফলে আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হবে না বাবা-মা বা অভিভাবককে। সম্প্রতি সিয়াচেনে এক অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন অংশুমান। রীতিমতো ভারাক্রান্ত কণ্ঠে প্রয়াত ক্যাপ্টেনের বাবা-মা জানিয়েছেন, বউমা তো আমাদের সঙ্গে থাকেন না। কীর্তিচক্র এবং অংশুমানের (Anshuman singh) যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে গেছেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর পরে উত্তরাধিকারের সব সুবিধা বউমাই পান। আমাদের কাছে ছেলের শুধুমাত্র একটি ছবি আছে, গলায় মালা পরানো সেই ছবি দেওয়ালে ঝুলছে। লখনউবাসী বৃদ্ধ বাবা-মায়ের এই করুণ বার্তাই বুঝিয়ে দিচ্ছে সেনা জওয়ান বা ক্যাপ্টেনের মৃত্যুর পরে তাঁদের বয়স্ক অভিভাবকরা ঠিক কতটা অসহায়। উত্তরাধিকার মনোয়নের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীতে কী নিয়ম এখন? একজন অফিসার যখন সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তখন তাঁর নমিনি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয় তাঁর বাবা-মা বা অভিভাবককে। এটা কিন্তু যতদিন তিনি অবিবাহিত থাকবেন ততদিন পর্যন্ত। কিন্তু বিয়ে হয়ে গেলেই মনোনীত উত্তরাধিকারী হিসাবে স্বীকৃতি পাবেন অফিসারের নববিবাহিত স্ত্রী। কর্মরত অবস্থায় স্বামীর অকাল মৃত্যু হলে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অধিকার থাকবে শুধুমাত্র তাঁরই। ঠিক এই জায়গাটাতেই অসহায় বোধ করেন অফিসারের বাবা-মা। খুবই অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে পড়ে যান তাঁরা। প্রয়াত ক্যাপ্টেনের বাবা-মায়ের কথায় প্রতিফলিত হয়েছে এই অসহায় মানসিকতাই।
আরও পড়ুন-নেপালে ভূমিধসে নদীতে ভেসে গেল বাস, ৭ ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যু
লক্ষণীয়, গত ফেব্রুয়ারিতেই স্মৃতির সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন পাঞ্জাব রেজিমেন্টের মেডিক্যাল কোরের ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং। স্মৃতির সঙ্গে দীর্ঘ ৮ বছরের সম্পর্ক পরিণতি পায়। কিন্তু বিয়ের দু’মাসের মধ্যে সিয়াচেনে বদলি হন অংশুমান। তারপরের জুলাইতেই সব স্বপ্নের ইতি নবদম্পতির। প্রাণ হারান অংশুমান।