আদিবাসীদের জমি যাতে কেউ কেড়ে নিয়ে না পারে তার জন্য আইন করেছে তৃণমূল সরকার। বৃহস্পতিবার, ঝাড়গ্রামে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানালেন, আদিবাসীদের জমির অধিকার দিয়েছে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে আদিবাসীদের জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে কোনও রকম দুর্নীতি কড়া হাতে দমন করা হবে বলে বার্তা দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সরকারি পরিষেবা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মঞ্চ থেকে জাল আদিবাসী শংসাপত্র নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, “আদিবাসীদের নামে জাল সার্টিফিকেট মানব না। কিছু BLRO দুষ্টুমি করে গেছে। খতিয়ে দেখে বাদ দেওয়া হবে।“ ভুয়ো সার্টিফিকেট দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদিবাসীদের জমির অধিকারী দিতে আইন করেছে রাজ্যে। ঝাড়গ্রামে প্রায় ৬৭ পরিবারকে জমির পাট্টা দেওয়ার কথা মুখ্যসচিব ও জেলাশাসককে বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদিবাসী হস্টেলে খাবারের খরচ ১০০০টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০০ টাকা করা হয়েছে। অলচিকি স্কুলে প্যারা টিচার নিয়োগ শুরু হচ্ছে। রক্তক্ষয়ী জঙ্গলমহলের কথা স্মরণ করে মমতা বলেন, ১১ বছর আগে ঝাড়গ্রামে রক্ত ঝরত। আর যেন রক্ত না ঝরে। এখন উন্নয়নের পালা। ঝাড়গ্রাম জেলায় নবরূপে সজ্জিত হয়েছে রামেশ্বর মন্দির, বিষ্ণু মন্দির, নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা বেড, কুর্মি ভবন , বেঙ্গল আর্চারি একাডেমির পরিকাঠামো উন্নয়ন, জেলা জুড়ে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার লক্ষে ৩১টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩৫টি সোলার পাম্প, সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। মোট খরচ হয়েছে ২১১ কোটি টাকা। এছাড়াও ২৭৪ কোটি টাকা অর্থ মূল্যের শিলান্যাস হয়েছে। ঝাড়গ্রামের অন্যতম বিশিষ্ট আদিবাসী ব্যক্তিত্ব কালীপদ সোরেনকে বঙ্গবিভূষণ সম্মাননা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ‘পাপ কা পয়সা’: বাংলা থেকে কোটি কোটি টাকা কর শোষণ করা নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে তুলোধনা অভিষেকের
এই মঞ্চ থেকে মোদি সরকারকে তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “দিল্লির সরকার কিছু লোককে লুকিয়ে লুকিয়ে উজালা গ্যাস দিচ্ছে। এখন দিচ্ছে পরে কেড়ে নেবে। আদিবাসী, তপশিলিকে ওরা ভালবাসে না।“ বিজেপি এবার ভোটে জিতলে, গ্যাসের দাম এতো বাড়িয়ে দেবে যে সাধারণ মানুষকে আবার কাঠ-কয়লার উনুনে রান্না করতে হবে- আশঙ্কা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আধার কার্ড নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, “আধার কার্ড কেন কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল? সঙ্গে সঙ্গে ফোঁস করলাম। ৫ বছর ফরেনার থাকতে হবে। নাগরিক থাকতে পারবে না।“ পুরুলিয়ার পরে ঝাড়গ্রামের সভা থেকে সারি-সারনা ধর্ম নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, কেন্দ্র সারি-সারনা ধর্মকে কেন্দ্র স্বীকৃতি না দিলে আগামী দিনের বড় আন্দোলনে নামবেন তিনি।