দুর্নীতি ইডি অফিসারের তোপে এবার সিবিআই

কারণ তিনি সিবিআই কর্মকর্তাদের দ্বারা সংঘটিত অবৈধ কাজগুলির গোপন তদন্ত করছিলেন। আর এই কারণে সিবিআই তাঁকে হেনস্থা করছে।

Must read

প্রতিবেদন : দুর্নীতি ইস্যুতে দেশের প্রধান দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মধ্যেই আকচাআকচি শুরু হয়েছে। ঘটনাচক্রে কেন্দ্রের মোদি সরকারের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে বিরোধীদের জেলে পাঠানোর ক্ষেত্রে এই দুই সংস্থাই গত কয়েক বছরে বেশ নামডাক অর্জন করেছে। কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার সেই দুই তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) এখন একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্ফোরক অভিযোগ তুলছে। আর এই বেনজির কাণ্ডে মুখ পুড়ছে মোদি সরকারের।

আরও পড়ুন-ঘরেই কোণঠাসা ইউনুস

সম্প্রতি ইডি কর্মকর্তা বিশাল দীপ অভিযোগ করেছেন, তিনি সিবিআইয়ের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। কারণ তিনি সিবিআই কর্মকর্তাদের দ্বারা সংঘটিত অবৈধ কাজগুলির গোপন তদন্ত করছিলেন। আর এই কারণে সিবিআই তাঁকে হেনস্থা করছে। চণ্ডীগড় সিবিআই কোর্টে দায়ের করা নিজের অগ্রিম জামিনের আবেদনে দীপ দাবি করেছেন যে, দুর্নীতির মামলায় তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে যাতে দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যকলাপে জড়িত সিবিআইয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা এবং অভিযোগকারীদের রক্ষা করা যায়। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ সিবিআই কোর্টের বিচারক অলকা মালিক সিবিআইকে তাদের জবাব জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সিবিআই দীপের বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় দুটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। অভিযোগগুলি গত বছরের ২২ ডিসেম্বরের, যখন দেবভূমি গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনস, চেয়ারম্যান ভূপিন্দর কুমার শর্মা এবং হিমালয়ান গ্রুপ অফ প্রফেশনাল ইনস্টিটিউশনস, চেয়ারম্যান রজনীশ বনশল অভিযোগ করেন যে, দীপ এবং অন্যান্য ইডি কর্মকর্তারা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের মামলায় গ্রেফতারি এড়ানোর জন্য ঘুষ চেয়েছিলেন। দীপ তাঁর জামিনের আবেদনে বলেছেন, সিমলায় ইডির সহকারী পরিচালক হিসেবে তিনি হিমাচলপ্রদেশ স্কলারশিপ কেলেঙ্কারি মামলায় অপরাধলব্ধ অর্থের তদন্ত করছিলেন। তাঁর অভিযোগ, তদন্ত চলাকালীন সিবিআইয়ের একজন ডিএসপি, যিনি এই কেলেঙ্কারির এক প্রাক্তন তদন্তকারী অফিসার এবং মামলার অভিযোগকারী, তাঁকে ঘুষ নেওয়ার জন্য প্ররোচিত করেছিলেন। দীপ দাবি করেছেন, সিবিআই ডিএসপি তাঁকে ঘুষ নিতে এবং অভিযোগকারীদের অবৈধ সুবিধা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এমনকী তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো এবং শাস্তিমূলক বদলি করারও হুমকি দেওয়া হয়। ইডি অফিসার দীপের দাবি, তিনি সিবিআই অফিসারের ঘুষ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। বরং তিনি সিবিআই ডিএসপি এবং অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পিএমএল অ্যাক্টের ৬৬ ধারা অনুযায়ী একটি গোপন তদন্ত শুরু করেন। ইডি অফিসারের আবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে নথিভুক্ত এফআইআরগুলি প্রায় একই ধরনের এবং স্কলারশিপ কেলেঙ্কারির অভিযুক্তদের মাধ্যমে একই চ্যানেল ব্যবহার করে দায়ের করা হয়েছে। দীপ যুক্তি দিয়েছেন যে, এই বিষয়ে সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্ত অস্পষ্ট এবং বিদ্বেষপ্রসূত। সিবিআই তাঁর বাড়ি এবং অফিসে অবৈধভাবে তল্লাশি চালিয়েছে। ইডি অফিসার দীপের দাবি, সিবিআই তাঁর সংগ্রহ করা দুর্নীতি-তদন্তের প্রমাণগুলি নিয়ে গিয়েছে। সিবিআই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ধ্বংস করতেই এই বেআইনি পদক্ষেপ।

Latest article