প্রতিবেদন : পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের পর এবার কাঁথি। এনআইএ-র পর এবার সিবিআই (TMC- CBI)। তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও পদাধিকারীদের ওপর এজেন্সির আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি আরও প্রকট হচ্ছে। এবার ২০২১-এর পুরনো একটি মামলায় কাঁথির ৩০ জন তৃণমূলের নেতা-কর্মীকে তলব করল সিবিআই। সোমবারই তাদের নোটিশ পাঠিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে। লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপিকে সুবিধে করে দিতে-মাঠ ফাঁকা করতে তৃণমূলের বুথস্তরের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করেছে গদ্দার অধিকারী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির পরিকল্পনামতোই কাজ করছে এনআইএ, সিবিআই-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ভয় পাচ্ছে তৃণমূলকে। বিজেপির সংগঠন নেই। সেই কারণে কোথাও এনআইএ দিয়ে কোথাও সিবিআইকে দিয়ে কোথাও অন্যান্য এজেন্সিকে ব্যবহার করে তারা তৃণমূলের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে একেবারে বুথ স্তরে যাঁরা বুথ আগলে রাখেন, তৃণমূলের সংগঠকেরা তাঁদেরকে বুথ থেকে সরাবার চেষ্টা করেছে।
সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপি একটা ম্যাচ খেলার চেষ্টা করছে। রেফারিকে দিয়ে বিপরীত দিকে যে আছে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে সরিয়ে দেবে। এই কারণে ওরা সিবিআইকে দিয়ে ৩০ জনকে ডেকে পাঠিয়েছে। ২১ সালের মামলার চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। ৬ জনের নামে চার্জশিট। সেই চার্জশিটে নাম নেই এমন ৩০ জনকে ডেকে পাঠিয়েছে। যারা এলাকায় আমাদের সংগঠন করেন বুথের এজেন্ট হন। অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেড মেদিনীপুর নিয়ে ভয় পাচ্ছে। সেই কারণে এলাকা ফাঁকা করার জন্য এনআইকে ব্যবহার করছে। তাঁর সংযোজন, এনআইএ সূত্রে খবর আছে আরও একাধিক জেলায় এইভাবে কয়েকজনকে টার্গেট করে তল্লাশি-পরিকল্পনা করে অ্যারেস্ট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ধনরাম সিং এই পরিকল্পনা করে রেখেছে তার বাহিনী নিয়ে। বিজেপি বুঝে গেছে জনমত তাদের সঙ্গে নেই তারা হারবে।
আরও পড়ুন- এজেন্সি কর্তাদের সরানোর দাবি তৃণমূলের, কমিশনে ধরনায় বসতেই শাহর পুলিশের নির্লজ্জ হামলা
একুশ সালের মামলায় ২৪ সালের ভোটের মুখে কাঁথিতে সিবিআই ৩০ জনকে নোটিশ পাঠাল, যাদের নাম চার্জশিটে নেই। কাপুরুষ অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেড এ সব করাচ্ছে। বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এলাকায়। তীব্র নিন্দা করছি। এভাবে বিজেপি জিততে পারবে না। মানুষ বুঝতে পারছে সিবিআই, এনআইএ এবং অন্যান্য এজেন্সিকে দিয়ে এই গন্ডগোল করা হচ্ছে, প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। সাফ কথা তৃণমূলের। পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানা এলাকায় প্রথমে কাঁথি উত্তরের ১৩ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে সিবিআইয়ের নোটিশ। পরে আরও ১৭ জনকে নোটিশ।
২০২১ সালে জন্মেজয় দলাই ওরফে চাঁদু নামের এক নেতা খুনের মামলায় এই তলব বলে জানা গিয়েছে। এই মামলায় কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC- CBI) আইএনটিটিইউসির সভাপতি বিকাশ বেজ-সহ বাকিদের তলব করা হয়েছে। কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভোটের মুখে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমরা ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে পালটা চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা কেউ হাজিরা দিইনি। তৃণমূলের বক্তব্য, এবার কাঁথিতে বিজেপি প্রার্থী গদ্দার অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু। বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই। নিশ্চিত হার বুঝতে পেরে ভোটের আগে এজেন্সি দিয়ে তৃণমূলের সংগঠন ভাঙতে চাইতে। একের পর এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে মাঠ ফাঁকা করতে চাইছে অধিকারী পরিবার।