প্রতিবেদন : ফের ভূস্বর্গে গুলির লড়াই প্রাণ কাড়ল পাঁচ সেনা জওয়ানের (Jawans)। জম্মু ও কাশ্মীর যে সেনা জওয়ানের জন্য এখনও নিরাপদ নয়, এখনও সে অর্থে সুরক্ষা নেই, তা বারবার প্রমাণিত। কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতির কারণেই বারবার মৃত্যু হচ্ছে সেনা জওয়ানের। সোমবার রাতে ডোডায় জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টারে শহিদ হলেন আধিকারিক-সহ ভারতীয় সেনার পাঁচ জওয়ান। তার মধ্যে রয়েছেন দার্জিলিং লেবঙের ভূমিপুত্র ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপা। শিলিগুড়ি-সহ গোটা পাহাড় ও বাংলায় শোকের ছায়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, জম্মু ও কাশ্মীরে দায়িত্ব পালনের জন্য দার্জিলিং-এর তরুণ সেনা অফিসার ব্রিজেশ থাপা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর প্রয়াণে আমরা আন্তরিক দুঃখিত। তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।
আরও পড়ুন- আর মাত্র চার দিন, বাংলা জুড়ে শহিদ দিবসের প্রস্তুতি জোরকদমে
ডোডায় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে সেনার পাঁচ জওয়ান (Jawans) গুরুতরভাবে জখম হন। তাঁদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ডোডা টাউনের ৫৫ কিলোমিটার দূরে দেসা জঙ্গল এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন ভারতীয় সেনার রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপের জওয়ানরা। তল্লাশি অভিযান চলাকালীন প্রায় ২০ মিনিট ধরে গুলির লড়াই চলে। জঙ্গিরা পালানোর চেষ্টা করলে উঁচু এলাকা এবং ঘন জঙ্গল সত্ত্বেও তাদের ধাওয়া করেন যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। সেই পরিস্থিতিতে রাত ৯টা নাগাদ জঙ্গলের মধ্যে ফের গুলির লড়াই শুরু হয়।
গুলির লড়াইয়ে নিহত ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপার বাড়ি শিলিগুড়ির শাস্ত্রী নগরে। গত ৫ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাবা ভুবনেশ থাপা সেনাবাহিনীতে কর্নেল ছিলেন। তাঁর ঠাকুরদাদাও কর্মরত ছিল সেনাতে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন ব্রিজেশ। গত সেপ্টেম্বরে কাশ্মীরে বদলি হন তিনি। ভুবনেশ থাপা বলেন, চলতি মাসেই বাড়ি ফিরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেঘালয় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। তিনি বলেন, দার্জিলিং জেলার পাহাড়ের গোর্খারা সেনাতে কর্মরত। তাঁরা দেশের জন্য শহিদ হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এত বছরেও কাশ্মীর এখনও সুরক্ষিত নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতির কারণেই শূন্য হচ্ছে মায়েদের কোল। ব্রিজেশ একমাত্র পুত্র। তার এক দিদি রয়েছে।
মঙ্গলবার রাতেই বিশেষ বিমানে কফিনবন্দি মৃতদেহ ফিরবে বাগডোগড়া বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ব্যাংডুবি সেনা ছাউনিতে শায়িত থাকবে ব্রিজেশের দেহ। বুধবার সকালে সড়ক পথেই দার্জিলিংয়ের লেবঙে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। সেখানেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যসম্পন্ন হবে।