নয়াদিল্লি : সার্বভৌমত্বের কথা বলে রোহিঙ্গা (Rohingya Issue) সমস্যা নিয়ে তথ্য জানার অধিকার অগ্রাহ্য করল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাফাই, যে বিষয় দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সেই বিষয় সম্পর্কে তথ্য জানার অধিকার আইনে কিছু জানানো যায় না। সেই তথ্য প্রকাশের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই সরকারের। ঘটনা হল, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দিল্লির আম আদমি পার্টির সরকারকে একটি চিঠি পাঠানো হয় বলে খবর। সেই সম্পর্কেই তথ্য জানার অধিকার আইনে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জানতে চায় এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এমনই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন্দ্রের দুই মন্ত্রকের মধ্যে চূড়ান্ত ভুল বোঝাবুঝি প্রকাশ্যে এসে যাওয়াতেই এই সম্পর্কে তথ্য লুকোতে নয়া যুক্তি খাড়া করেছে বিজেপি সরকার।
প্রসঙ্গত, গত অগাস্টে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী ট্যুইটারে ঘোষণা করেছিলেন, দিল্লির রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য তৈরি করা ফ্ল্যাটে স্থানান্তরিত করা হবে। তিনি আরও জানান, যে দেশের নাগরিকই ভারতে উদ্বাস্তু হতে চাইবেন, তাঁর পাশে থাকবে ভারত। তিনি আরও জানান, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু চুক্তি ১৯৫১ কে সম্মান করে এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে উদ্বাস্তু হিসেবে সুবিধা দেয়। কিন্তু তাঁর এই ঘোষণার পরেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ থেকে শুরু করে বিজেপি নেতাদের একাংশ হরদীপ সিং পুরীর তীব্র সমালোচনায় সরব হয়। এর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে পুরীর বক্তব্য খণ্ডন করা হয়। সেইসঙ্গে জানানো হয়, ভারত রোহিঙ্গাদের অবৈধ পরিযায়ী বা অনুপ্রবেশকারী মনে করে। খুব শিগগিরই তাদের মায়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য তৈরি করা ফ্ল্যাটে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার কোনও চিন্তাভাবনাই নেই সরকারের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সেই সময়ে আরও জানায়, রোহিঙ্গারা তাদের বর্তমান জায়গাতেই থাকবে। তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বিদেশমন্ত্রক।
আরও পড়ুন-মোদির গুজরাত সফরের মাঝেই ব্রিজ ভেঙে দুর্ঘটনা, নদীতে পড়ে যান বহু মানুষ
দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির কালিন্দীকুঞ্জ এলাকায় খোলা জায়গায় তাঁবুতে বাস করেন রোহিঙ্গারা (Rohingya Issue)। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাদ্যমের তরফে দিল্লি সরকারকে পাঠানো চিঠির তারিখ এবং বিষয়বস্তু জানতে চাওয়া হয়। তার জবাবেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, যে তথ্য প্রকাশ করলে দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, নিরাপত্তা এবং ভিন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে অথবা অপরাধে ইন্ধন দেবে সেই তথ্য প্রকাশে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই সরকারের। অনেকেই মনে করছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব প্রকট হওয়ার কারণেই এই লুকোছাপা।