মানস দাস, মালদহ : রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত তিন বোনের পুজো। বুড়িকালীর পুজো চাঁচল রাজার উদ্যোগে শুরু হলেও মালদহের লস্করপুরের কালীপুজো স্থানীয় মুসলিম জমিদার মহসিন আলি ও হোসেন চৌধুরি শুরু করেন। স্বাভাবিকভাবেই তিন বোনের পুজোতে তাই উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের আগ্রহ অসীম। তিন কালী প্রতিমার গঠন প্রায় একই, উচ্চতা ১৮ ফুট। হরিশ্চন্দ্রপুরের মোবারকপুর, রতুয়ার লস্করপুর ও চাঁচলের ৩২ কলার কালী সম্পর্কে তিন বোন বলে পরিচিত। এঁদের মধ্যে মোবারকপুরের কালীকে বলা হয় বড় বোন। এই দেবী বুড়িকালী নামে পরিচিত। মণ্ডপে জাঁকজমক নেই, কিন্তু তিনটি পুজোই আজও মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণ হিসাবে থেকে গিয়েছে। তিন বোনের পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সম্প্রীতির আবহ। চাঁচল রাজার উদ্যোগে মোবারকপুরে কালীপুজো ও মেলা শুরু হয়েছিল। কালের পরিবর্তনে তা স্থানীয় গ্রামবাসীদের পুজোয় পরিণত।
আরও পড়ুন : আগরতলায় ৫১ আসনেই মনোনয়ন তৃণমূল কংগ্রেসের
প্রাচীন প্রথা মেনেই সাধারণত পুজোর পরের দিন থেকে চারদিন মেলা বসে। তবে গত দু’বছর করোনা আবহের কারণে মেলা বন্ধ রয়েছে। এবারও বাসিন্দাদের সিদ্ধান্তমতো মেলা হবে না। কয়েক বছর আগে পুজো হত খোলা আকাশের নিচে। কুয়াশার হাত থেকে বাঁচতে মাথার উপরে থাকত একটি চাঁদোয়া। বর্তমানে তৈরি হয়েছে বিশাল মন্দির। পুজো ঘিরে ৭-৮টি গ্রামের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন। লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে শুরু হয় কাঠামোতে মাটির কাজ। তৈরি হয় বিশাল আকারের কালীপ্রতিমা। কিন্তু পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন প্রতিমা রং করা হয়। তারপর সেই প্রতিমা পুজোর থানে নিয়ে আসা হয়। তিনদিন পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন আট থেকে আশি সকলে।