বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat election) হিংসার অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। রাজ্যে দুর্নীতি নিয়েও তার বিস্তর অভিযোগ। কিন্তু এরপরেই পাল্টা দুর্নীতি ইস্যুতে মোদিকে নিশানা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
মোদি জমানায় একের পর এক দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানায় নিয়ে অডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনি কখনওই দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেন না। কারণ, আপনি নিজেই অনেক বিষয়ে ঘিরে রয়েছেন। যেমন, পিএম কেয়ার ফান্ড, রাফাল চুক্তি, দেশের প্রতিরক্ষা কারখানা বিক্রি করে দিচ্ছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছেন। আগে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর সম্পর্কে সংসদকে জানাতে হত। বিদেশযাত্রার সমস্তকিছু খুঁটিনাটি জানানো ছিল নিয়ম। কিন্তু উনি সেসব মানেন না। রাষ্ট্রপ্রধানদের দামি দামি উপহার দিয়ে সুনাম কিনছেন। মানুষকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করে কোথা থেকে এই উপহার যাচ্ছে। কোথায় গেল পিএম কেয়ারের টাকা? সিএসআর ফান্ড বন্ধ করে, ৩ বছর সরকারি কর্মীদের ডিএ বন্ধ রেখে, একদিন মাইনে বন্ধ রেখে লক্ষ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সেসব কোথায়?” মমতা আরও বলেন, “নোট বাতিল করা হয়েছে নোটবন্দির নামে। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা কোথায় গেল কেউ জানল না। আপনি নিজের এবং নিজের পার্টির স্বার্থে ২ হাজার টাকার নোট বাতিল করেছেন। আপনি সব সময় মানুষকে বোকা ভাববেন না। কিছু সময় মানুষকে বোকা বানানো যায়, কিন্তু সব সময় আপনি মানুষকে বোকা বানাতে পারবেন না।”
প্রধানমন্ত্রী ‘নিজেদের দুর্নীতিপরায়ণ লোকদের’ বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেন না বলেও ওই অডিয়োবার্তায় আক্রমণ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, “আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও (চ্যারিটি বিগিংস অ্যাট হোম)। আপনি আগে নিজের চেহারা দেখুন। আপনি নিজেদের দুর্নীতিপরায়ণ লোকেদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেন না। যাঁরা চরিত্রহননের কাজ করে, মহিলাদের অসম্মান করে, যারা কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে অন্যায় করে, যারা মণিপুরে অন্যায় করে, সব জায়গায় যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে… আপনাদের লোকেরা বাংলার ১৬-১৭ জন মানুষকে হত্যা করেছেন। তাঁদেরকেও আপনি রাজনৈতিক বাতাস দিয়ে চলেছেন।” এছাড়াও হিংসা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে বাংলাকে বদনাম করা, বাংলাকে ভাতে মারা। কারণ বাংলাকে আপনি ভয় পান। আপনি জানেন বাংলা নব জাগরণের পুন্যভূমি, সংস্কৃতি মাটি। আমাদের এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই, আমরা একসাথে চলি। অন্যদিকে আপনাদের কাজ মণিপুরে জাতি দাঙ্গা লাগানো, দার্জিলিং, উত্তরবঙ্গকে টুকরো করা, জঙ্গলমহলে আগুন লাগানো। সেটা আমরা লাগাতে দেব না।’