ডিভিসি জল ছেড়েছে না জানিয়ে, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীকে বলেও কাজ হয়নি

Must read

প্রতিবেদন : বর্ষা এবার অনেকটা আগেই এসে পড়েছে। তার উপর ডিভিসির আগাম না-জানিয়ে লাগাতার জলছাড়ার ফলে রাজ্যের একাধিক জেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এদিন ফের ডিভিসির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee- DVC)। তিনি বলেন, ১৮ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ডিভিসি প্রায় ২৭ হাজার লক্ষ কিউবিক মিটার জল ছেড়েছে রাজ্যকে না জানিয়ে। তিনি জানান, ১৫ বছর ধরে আমরা এই সমস্যায় ভুগছি। বহুবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি, নীতি আয়োগের বৈঠকেও বিষয়টি তুলেছি। তবু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, অসম রাজ্য বন্যাত্রাণের টাকা পেলেও বাংলা সেই সহায়তা পায় না।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee- DVC) নেতৃত্বে কৃষি, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, সেচ, বিপর্যয় মোকাবিলা-সহ একাধিক দফতর এবং সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনকে সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, প্রশাসনের কর্তব্য হল রাত জেগে রাস্তায় থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

আরও পড়ুন- মঞ্চ তৈরির আগে খুঁটিপুজো সারা! অপেক্ষা ২১ জুলাই মহাসমাবেশের

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, জেলা প্রশাসনকে নিচু এলাকাগুলিতে মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করতে হবে। কাঁচাবাড়িতে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। বিশেষ নজর দেওয়া হবে ঘাটাল, খানাকুল এবং ঝাড়গ্রাম অঞ্চলে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, শুকনো খাবার, পানীয় জল, ত্রিপল, সাপে কাটা ও ডায়ারিয়ার ওষুধ-সহ জীবনদায়ী ওষুধ আগাম মজুত রাখতে হবে।

বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা রুখতে বিদ্যুৎ দফতরকে জনসচেতনতায় প্রচার বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেচ দফতরকে সমস্ত বাঁধ পরিদর্শনের নির্দেশ দেন এবং বন্যা-রোধে উপকূলবর্তী অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বনসৃজনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি কৃষকদের আশ্বস্ত করে বলেন, বর্ষার ফলে ফসল নষ্ট হলেও ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিপূরণ মিলবে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং এনডিআরএফকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। শহরাঞ্চলে যাতে নির্মাণসামগ্রী ড্রেন বন্ধ না করে জল জমার সমস্যা না বাড়ায়, সেদিকেও নজর দিতে বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আবেদন জানিয়েছেন, এই সময় প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকবে, তাই তাঁরা যেন প্রশাসনিক কাজে কোনওরকম বাধা সৃষ্টি না করেন।

Latest article