জম্মু-কাশ্মীরে উধমপুরে সেনা জঙ্গির গুলির লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন নদিয়ার (Nadia) জওয়ান ঝনটু আলি শেখ। এরপরেই শহিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার পরিবারের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ঝন্টু আলি শেখের পরিবারকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদিয়ার তেহট্টে তাঁর বাড়িতে রাজ্য মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য যাবেন। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-বিড়ি ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার বিজেপি নেতা
উল্লেখ্য কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হালমায় ২৮ জন ভারতবাসীর মৃত্যুর পর থেকেই উত্তপ্ত পরিবেশ। হামলার পরই কাশ্মীরে উরি সেক্টরে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সেনার ৷ কাশ্মীরে এখন জোর কদমে চলছে তল্লাশি অভিযান। বৃহস্পতিবার উধমপুরে তল্লাশি অভিযানেরব সময় সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ঝন্টু আলি শেখ।
এদিন সকাল থেকে এলাকাজুড়েই তল্লাশি অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী ৷ এই সময় দুদু-বসন্তগড় এলাকায় সেনাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় এবং আহত হন ঝন্টি আলি শেখ। গুরুতর অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা শুরু হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরে চলছিল সেনা-জঙ্গির গুলির লড়াই। সেই সংঘর্ষেই শহিদ হন নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা ঝন্টু। বাড়িতে খবর পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। গ্রামবাসীরা ভিড় করেছেন এই বাড়িতে। বৃদ্ধ বাবা সবুর শেখ-সহ গোটা পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই তাঁদের।
ভিড়ের মাঝে বসে প্রতিবেশীদের কাছে পুত্রহারা বাবা বিলাপ করছেন। বললেন, ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিল ঝন্টু। মার্চ মাসে ফের ডিউটিতে যোগ দিতে চলে যায়। সেই শেষ দেখা। মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হত। কিন্তু ডিউটিতে চাপ থাকায় গত কয়েকদিন ফোন করেও ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। সেই আফসোস ঝরে পড়ছে বৃদ্ধের গলায়। শোকার্ত পরিবারটির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিয়েছেন পাশে থাকার বার্তা। ঝন্টুর নিহত হওয়ার খবর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানান তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও।
নদিয়ার তেহট্টের পাথরঘাটায় বাড়ি ঝন্টু আলি শেখের। নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গ্রামের কৃষিজীবী পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট ঝন্টু। বড় ভাইও ভারতীয় সেনায় কর্মরত। বছর ছত্রিশের এই যুবক ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৬ প্যারাস্যুট, স্পেশাল ফোর্সের সদস্য ছিলেন। ১০ বছর ভারতীয় সেনায় কর্মরত। বর্তমানে আগ্রায় পোস্টেড ছিলেন তিনি। সেখান থেকে অপারেশনের জন্য কাশ্মীরে পাঠানো হয়। ঝন্টুর দুই সন্তান ১২ বছরের পুত্র ও ৮ বছরের কন্যা। হোয়াইট নাইট কোর-এর তরফে এক্স হ্যান্ডেলে ঝন্টুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা হয়, কর্তব্যের প্রতি অবিচল থাকা ও সাহসের সঙ্গে ঝন্টু যেভাবে লড়েছেন, তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।