আদিবাসী উন্নয়নে কড়া মুখ্যমন্ত্রী, চোপড়ার মৃতদের পরিবারকে সাহায্য

প্রতিবেদন : ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাহাড় আর জঙ্গলমহলের জন্য আর্থিক বরাদ্দ ও উন্নয়নের অভিমুখ তৈরি করে আর্থিক বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন। পিছিয়ে থাকা আদিবাসী জনজাতি গোষ্ঠীর জন্য একাধিক প্রকল্প এনেছেন এরপর। দশকের পর দশক বঞ্চিত থাকা বাংলার প্রান্তিক মানুষগুলোর জন্য প্রথমদিন থেকেই ভেবেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। গত ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে যা বেড়েছে বই কমেনি। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন আদিবাসী জনজাতি গোষ্ঠীদের তিনি সবসময় আগলে রাখতে চেষ্টা করেছেন। দরদি মন নিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছেন তাদের দাবি-দাওয়া, সুযোগ-সুবিধা, অসুবিধের কথা। বৃহস্পতিবার নবান্নে সবক’টি আদিবাসী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে ফের একবার প্রমাণিত হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের জন্য কতটা ভাবেন। এদিন রাজ্যে আদিবাসীদের উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্নে আদিবাসীদের সবক’টি সংগঠনের নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁদের দাবি-দাওয়া মন দিয়ে শোনেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। আদিবাসীদের তরফে বেশ কিছু বিষয় মুখ্যমন্ত্রীর সামনে রাখা হয়। যার মধ্যে কুড়মিদের তফসিলি জাতিভুক্ত করার বিষয়টিও ছিল। রাজ্য সরকারের তরফে সিআরআই রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া মুখ্যসচিবকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে যত আদিবাসীদের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে তার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। দেখতে হবে একজন আদিবাসীও যেন প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত না হন। আদিবাসীদের প্রকল্পগুলি দ্রুত বাস্তবায়নে বিভিন্ন আদিবাসী বোর্ডের জন্য আর্থিক বরাদ্দ করলেন। এর মধ্যে বাউড়ি বোর্ডের জন্য ৫ কোটি টাকা, আদিবাসী উন্নয়ন বোর্ডের ২ কোটি ও বাগদি বোর্ডের জন্যও কয়েক কোটি টাকা আর্থিক বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও চোপড়ায় শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারের তরফে শিশুদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকটি জেলার জেলাশাসকের আচার-ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কয়েকজন অফিসারের জন্য রাজ্য সরকারের মুখ পুড়বে কেন? এদিন বাঁকুড়ার জেলাশাসককে ব্যাপক ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিবাসীরা বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেশ কিছু জেলার সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের কাজকর্ম ও অন্যান্য বিষয়ে আদিবাসীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, জেলায় সরকারি আধিকারিকরা (ডিএম, এসপি, এসডিও, বিডিও) আপনাদের কথা না শুনলে, কাজ না করলেন সরাসরি আমাকে জানান।

আরও পড়ুন- বৈষম্যের রাজনীতি বাংলায় মানব না, রাজ্য জুড়ে ছাত্র-যুব মিছিল