আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য বড় উপহার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। নিউটাউনে উদ্বোধন হল দুটি বহুতল আবাসনের। নাম ‘নিজন্ন’ও ‘সুজন্ন’। বৃহস্পতিবার এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকেই কেন্দ্রকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের একবার বঞ্চনার অভিযোগে মুখ খুললেন তিনি। আবাসন সম্পর্কিত বিষয়ে তিনি এদিন বলেন, ”নিউটাউনে ‘নিজন্ন’ ও ‘সুজন্ন’ তৈরিতে বিনামূল্যে ৭ একর জমি দিয়েছে রাজ্য। আবাসন দুটো তৈরিতে মোট ব্যয় হয়েছে ২৯০ কোটি টাকা। দু’টি বহুতল আবাসন মিলিয়ে ১২১০ ফ্ল্যাট আছে। ৭ একর জায়গা জুড়ে তৈরি বহুতল ওই আবাসনে ৬২০ স্কোয়্যার ফিটের ৭২০টি 2BHK ফ্ল্যাট রয়েছে। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজারদরের তুলনায় অনেক সস্তায় পাওয়া যাবে এই ফ্ল্যাট এবং বিক্রি হবে লটারির মাধ্যমে। জমি সরকার দিয়েছে। জমির দাম নেওয়া হয়নি। ভর্তুকি দিয়ে বাজারে যা দাম তার থেকে অনেক কম দামে এই ফ্ল্যাটগুলি পাওয়া যাবে। লটারি করে স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে ফ্ল্যাটগুলি। জমিগুলি বিনামূল্যে রাজ্য সরকার দিয়েছে। আমি চাই প্রতিটি মানুষের নিজস্ব আশ্রয় থাকুক। নিউটাউনে যারা গরিব মানুষ তাদের জন্য এই দু’টো বড় বহুতল আবাসন প্রকল্প তৈরি হয়েছে। যারা কম ইনকাম গ্রুপ আছেন তাদের জন্যও ফ্ল্যাট হয়েছে। EWS এবং LIG গ্রুপের জন্য এই আবাসনগুলি তৈরি করা হয়েছে। অনেক মানুষকে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিতে পারবে এই প্রকল্প। ১৫ তলার বিল্ডিং এটি। নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীদের জন্য ১৬ তলার ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে। যাতে ৭২০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া রাজারহাটে বহুতল পার্কিং লট তৈরি হয়েছে। সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুসম্পন্ন’। ৮ তলা গাড়ি রাখার ব্যবস্থাতে ১৫০০র বেশি গাড়ি থাকতে পারবে। ১৪১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। আবাসনের ছোটদের পার্কের নাম দেওয়া হয়েছে তরন্ন। এছাড়া সেখানে রয়েছে ২০০ আসনবিশিষ্ট মুক্তমঞ্চ, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া ও মর্নিং ওয়াকের জায়গা।”
আরও পড়ুন-রিল যখন রিয়্যাল! আইসিইউতে ঢুকে রোগীকে খুন নীতীশের বিহারে
এরপরেই কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”রাজ্য সরকার নিজের টাকা দিয়ে বাংলার বাড়ি করে দিয়েছে। বাড়ি তৈরী করার জন্য টাকা দেয় না কেন্দ্র। আমরা অন্তত চেষ্টা করেছি। কয়েক বছরের মধ্যে ৪৫ লক্ষ বাড়ি করেছি গ্রামীণ আবাস যোজনায়। পাঁচ বছর পর পর এক নম্বরে ছিলাম আমরা। গ্রামে রাস্তাতেও তাই ছিলাম। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরে এক পয়সাও দেয়নি কেন্দ্র। এখন সব বন্ধ। পাওনা টাকা পাচ্ছি না। তার পরও ১২ লক্ষ বাংলার বাড়ির টাকা রাজ্যের কোষাগার থেকে দেওয়া হয়েছে। ১৬ লক্ষ মানুষ আরও যাঁরা তালিকায় আছেন ডিসেম্বরে এক কিস্তি পেয়ে যাবেন, দ্বিতীয় কিস্তি পাবেন মে মাসে। বাকি যা থাকবে, ধাপে ধাপে করে দেব। কেন্দ্র আমাদের ২৪,০০০ কোটি টাকার তহবিল বকেয়া রেখেছে। আমরা ভিক্ষা চাই না, আমরা আমাদের অধিকার চাই।বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার ১৪,৭৭৩ কোটি টাকা ব্যয় করছে, যা সম্পূর্ণভাবে রাজ্যের তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষের জন্য কাজ করছি। কেন্দ্র যদি তহবিল না দেয়, আমরা নিজেদের অর্থে ২০২৬ সালের মধ্যে ২৮ লক্ষ পরিবারকে ঘর দেব।”