অজয় নদের উপর স্থায়ী সেতু তৈরি হওয়ার ফলে পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হলো। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যেও যোগাযোগের পথ সুগম হল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে কাঁকসার একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নতুন সেতু (Jaydev Bridge) তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জমিজট-সহ বিভিন্ন কারণে সেতু নির্মাণে বেশ কিছুটা সময় লাগলো। সেতুটি শিবপুর এলাকায় শুরু হয়ে ইলামবাজারের টিকরবেতায় শেষ হয়েছে। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ২.৭৩ কিলোমিটার। যার মোট খরচা ১৩৭ কোটি টাকা। ইলামবাজার হয়ে ঘুরে দুর্গাপুর মুচিপাড়া যেতে হলে কমপক্ষে ২৫কিলোমিটার রাস্তা বেশি যেতে হয়। এই সেতু চালু হলে মুচিপাড়া-শিবপুর রাস্তা ধরে শান্তিনিকেতন যাওয়ার দূরত্ব প্রায় ২২-২৫কিলোমিটার কমে যাবে।
উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অজয় নদের উপর যে সেতু গড়ে উঠেছে সেই সেতুর নাম জয়দেব সেতু (Jaydev Bridge) করা হোক। এই সেতু হওয়ায় উপকৃত হবেন বহু মানুষ। জয়দেবের মেলায় আসতেও মানুষের সুবিধা হবে।” এদিনই এই সেতু দিয়ে চালু হল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এসবিএসটিসি) দুর্গাপুর-সিউড়ি রুটের বাস। শিবপুর থেকে এদিন এই বাস পরিষেবা চালুর কথা জানান এসবিএসটিসির চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল। রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুর থেকে সিউড়ি রুটে সরকারি বাস পরিষেবা চালু হয়ে গেল। দুর্গাপুর-সিউড়ির মধ্যে এই সেতুর ফলে দূরত্ব কমল। সেতু তৈরি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও নিবিড় হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই সেতু নির্মাণের ফলে উপকৃত হবে দুই জেলার মানুষ। পণ্য পরিবহণে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগসূত্র আরও নিবিড় হল।আমরা খুব খুশি।”
আরও পড়ুন- বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর! ফের রুদ্ররূপী তিস্তার কবলে NH10
শিবপুরের দিকে দু’টি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। একটি মঞ্চে আধিকারিকরা আছেন। অন্যটি সাধারণ দর্শকদের জন্য। মঞ্চের ঠিক সামনেই এলসিডি স্ক্রিন রয়েছে। ইলামবাজার থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হচ্ছে। সেতুর উপর ফলক উন্মোচন করল গ্রাম উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, গলসির বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই, জেলাশাসক পন্নামবলাম এস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়ি, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত। এছাড়াও ছিলেন নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল প্রমুখ।
এদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারবাসীর বহু প্রতীক্ষিত লালপোল ব্রিজ অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হল। মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম থেকে ভার্চুয়ালি এই ৮০ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৫ মিটার প্রস্থের ব্রিজটির উদ্বোধন করেন। প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পূর্ত দফতরের (P.W.D) সহযোগিতায় তৈরি এই সেতুটি ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ ও তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিনের পুরনো লালপোল সেতুটি ভেঙে আধুনিক মানের এই নতুন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উদ্বোধনের পর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা উপস্থিত থেকে ব্রিজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার বিধায়ক পান্নালাল হালদার, মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ, ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন কুমার দেব (জোনাল)-সহ অনেকে।
এক হাজারের বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হল মঙ্গলবার। মোট মূল্য ১,১৪২ কোটি টাকা। এরমধ্যে সেতু, রাস্তা, জল প্রকল্প থাকবে, বিদ্যালয় কক্ষ, কমিউনিটি হল থাকছে। জয়দেব কেন্দুলির সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী একটি বড় সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেল। অজয় নদীর উপর হচ্ছে এই সেতু। এই সেতুর নাম জয়দেব সেতু করার প্রস্তাব দেন মমতা। বলেন, “আগে অজয় সেতু ছিল, এবার আরও এক নতুন সেতু। একটা নতুন পালক জুড়ল।” মালদহে ৫টি সেতুর উদ্বোধন করা হল। নদী, খাঁড়ির উপর এগুলি তৈরি করা হয়েছে। মমতা বলেন, পুরনো সেতুগুলি চওড়া কম ছিল। গাড়ি যেতে পারত না। মানুষের অসুবিধা হত। তাই এগুলি নতুন করে করা হয়েছে। ডেউচা পাচামিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ হচ্ছ গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়েছে। ডেউচা পাচামিতে এক লক্ষ কর্মসংস্থান হবে চলে আসুন। ডেউচা পাচামিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ হচ্ছ গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়েছে।