আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হাতে দেশের প্রথম এনজি ইলেকট্রনিক ফেরি ভেসেল পথ চলা শুরু করল। এদিন বিকেলে আউট্রাম ঘাট থেকে ফ্ল্যাগ অফ করে এই অত্যাধুনিক ই-ভেসেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যুৎ পরিচালিত এই ভেসেল তৈরী করতে রাজ্যের খরচ হয়েছে আনুমানিক ৬ কোটি টাকা। এদিন উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পরিবেশ দূষণ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে বিদ্যুৎ চালিত এই ভেসেল। এর ফলে যাত্রীরা যেমন আরও বেশি সুরক্ষিত হবেন তেমনই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন। আগামী দিনে আরও ১২টি ই-ভেসেল এবং ১২ টি বার্জ চালানো হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন-আর জি কর কাণ্ডের চূড়ান্ত রায়ের দিন ঘোষণা আদালতের
গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স এই লঞ্চ তৈরি করেছে। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলুড় মঠ হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যাবে এই ইলেকট্রনিক ফেরি ভেসেলটি। এই ই-ভেসেলটিতে এসি এবং নন এসি দুটি বিভাগ থাকছে। এসিতে ৩০ জন যাত্রী এবং নন এসিতে ৬২ জন যাত্রী যাত্রা করতে পারবে। ১৫০ জন যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ চালাতে ঘণ্টায় ১০ লিটার ডিজেল খরচ হয়। তবে এই ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত ভেসেল দু ঘণ্টা পর্যন্ত বা ৩০ কিমি পথ এক নাগাড়ে চলতে পারবে।
আরও পড়ুন-শৈত্যপ্রবাহ উত্তর ভারতে, ৫ ডিগ্রির নীচে পারদ
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে রাজ্যে ৩৭টি ডিজেল চালিত লঞ্চ আছে। পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই আগামী দিনে ডিজেল চালিত লঞ্চ কমিয়ে বিদ্যুৎ চালিত ভেসেল বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে রাজ্যের। এর ফলে জ্বালানি খরচ বাঁচানোর সঙ্গে দূষণের মাত্রা অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ অন্যান্য জেলার বিভিন্ন ঘাটে লঞ্চ পরিষেবা রয়েছে। তবে আগামী দিনে বাকি জেলাতেও ই-ভেসেল চালানো হবে।
গঙ্গাসাগর মেলার দু’দিন আগেই মেলার প্রস্তুতি নিজেই সরেজমিনে খতিয়ে দেখে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স থেকে হেলিকপ্টার, ১০০টি ভেসেল, ২,২৫০টি সরকারি বাস, ২৫০টি বেসরকারি বাস, ভেসেল ও বার্জে ফগ লাইট, স্যাটেলাইট ট্র্যাকার, মেডিক্যাল ক্যাম্প, পর্যাপ্ত ডাক্তার, মেগা কন্ট্রোল রুম ও একডজন মন্ত্রীকে দায়িত্বে রেখেছেন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১১-তে যখন আমরা ক্ষমতায় আসি তখন দেখেছিলাম গঙ্গাসাগরে কিছুই ছিল না। চারিদিক নোংরা-আবর্জনায় ভর্তি ছিল। পুণ্যার্থীদের থেকে তীর্থকর নেওয়া হত। ছিল না কোনও আধুনিক ব্যবস্থা। সে-সব আজ অতীত। সব মিলিয়ে এখন গঙ্গাসাগর বারবার। আগে বলা হত— সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। কিন্তু সেই প্রবাদ এখন বদলে গিয়েছে। কুম্ভমেলায় সড়ক পথে, রেলপথে সরাসরি যেতে পারেন। কিন্তু গঙ্গাসাগরে যেতে হলে জল পেরিয়ে যেতে হয়। সে-কারণে প্রত্যেকের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো খরচটাই বহন করছে রাজ্য সরকার। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে, জলপথে বাড়তি নজরদারি চালাতে। সজাগ রয়েছে রাজ্য পুলিশও। গঙ্গাসাগর মেলা সফল হবেই।