প্রতিবেদন : উত্তরবঙ্গ ধীরে ধীরে নিজের অবস্থায় ফিরছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে জোরকদমে চলছে পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের কাজ। সেই কাজের তদারকিতে রবিবারই উত্তরবঙ্গে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরদুয়ারে হাসিমারায় পৌঁছেই তিনি রিভিউ মিটিং করেন। তারপরই বেরিয়ে পড়েন বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে। এদিন টানা ছ’দিনের কর্মসূচিতে উত্তরে রওনা দেওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে পুনর্গঠনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। মা-মাটি-মানুষের সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। কেন্দ্রের সাহায্য আমাদের দরকার নেই। আমরাই সব কাজ করব।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে অপপ্রচার
উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি-ধসে বিপর্যয়ে প্রাথমিকভাবে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণ সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রাথমিকভাবে বিপর্যয়ের হিসাব ও পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি। দ্রুত কাজ চলছে। ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে উত্তর। যোগাযোগের সব পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। এবার মানুষের হাতে পরিষেবা পৌঁছে দিতে জেলায় জেলায় রিভিউ বৈঠক করতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় রিভিউ মিটিং করেছেন। আধিকারিকদের থেকে ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্গঠনের হিসাব নেন। সোমবার সকালে তিনি পৌঁছবেন ক্ষতিগ্রস্ত নাগরাকাটায়। মানুষের সমস্যার কথা শুনবেন। পাশাপাশি আরও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাও পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিংয়ের সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা মিরিক। মঙ্গলবার মিরিকের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর একদিন দার্জিলিংয়েই থাকবেন। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পরিস্থিতি নিয়ে রিভিউ বৈঠক করবেন। শুক্রবার কলকাতায় ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি কলকাতায় কালীপুজোর উদ্বোধন করবেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আলিপুদুয়ারে রিভিউ মিটিং করে জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কাজ করেছেন যাঁরা, তাঁদের সবাইকে পুরস্কৃত করা হবে। পুলিশ-প্রশাসন থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ছাড়াও পুরস্কৃত হবেন এলাকার সাধারণ মানুষও। এমনই ৮ জন সাধারণ মানুষকে এদিন আলিপুরদুয়ারে পুরস্কৃত করা হয়। রিভিউ মিটিং সেরে তিনি সুভাষিণী চা-বাগান পরিদর্শন করেন। শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেন। তাঁদের হাতে খাবার, শাড়ি-কম্বল ও শিক্ষাসামগ্রী-সহ ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন।
দুর্যোগে যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের জন্য ১২০,০০০ টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। স্বজনহারাদের ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। একজন সদস্যকে বিশেষ হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে। মিরিকে একটি নতুন সেতু ও অস্থায়ী ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে দ্রুত গতিতে।