প্রতিবেদন : প্রতিদিন বিভিন্নরকমের জন্মগত রোগ নিয়ে বহু শিশু পৃথিবীতে আসে। কারও হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কারও অসুখ স্নায়ুতন্ত্রে। একেবারে শুরুতেই সময় থাকতে থাকতে সেইসব রোগের চিকিৎসা না করালে পরবর্তীকালে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। সাধারণত, এইসব জন্মগত রোগের চিকিৎসায় খরচের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবু বাবা-মায়েরা যতই কষ্ট হোক না কেন, সেই টাকা জোগাড় করে সদ্যোজাত সন্তানের চিকিৎসা করান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় তৃণমূল সরকারের সামাজিক প্রকল্প ‘শিশুসাথী’র (Sishusaathi) আওতায় শিশুদের এইসব দূরারোগ্য জন্মগত রোগের চিকিৎসা হয় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শুরু হওয়া এই প্রকল্প বর্তমানে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে।
আরও পড়ুন-”তোমরা একা নও, পৃথিবী তোমাদের সঙ্গে আছে”, আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রকে অনুপ্রাণিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী
গত ১২ বছর ধরে সরকারি খরচে চিকিৎসার মাধ্যমে হৃদরোগ বা স্নায়ুতন্ত্রের অসুখ সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬৩ হাজারের বেশি শিশু। এক্স হ্যান্ডেলে ‘শিশুসাথী’ (Sishusaathi) প্রকল্পে এই সাফল্যের কথা জানিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিশুদের জন্য সবসময় সেরা স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্যেই ২০১৩ সালে ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ হিসেবে চালু হয়েছিল ‘শিশুসাথী’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জন্মগত হৃদরোগ, কাটা ঠোঁট ও তালু (ক্লেফট লিপ/প্যালেট), ক্লাবফুট ও নিউরাল টিউব ডিফেক্টে আক্রান্ত প্রায় ৬৩ হাজারের বেশি শিশুর নিখরচায় চিকিৎসা হয়েছে। আর এর জন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে একটিও শিশু যেন পিছিয়ে না পড়ে।
২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই ‘শিশুসাথী’ (Sishusaathi) প্রকল্প এখন সারা বাংলা জুড়ে বিস্তৃত। কলকাতা, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ-সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই একাধিক শিশু চিকিৎসা পাচ্ছে এই প্রকল্পের আওতায়। এর মূল লক্ষ্য, হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা। হৃৎপিণ্ডে ভালভের সমস্যা, ছিদ্র, রক্ত সঞ্চালনে অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি জটিল হৃদরোগের চিকিৎসা থেকে অস্ত্রোপচারকে এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সরকারের তরফে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার শিশুর হার্ট সার্জারির ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রকল্প স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলায় শিশুমৃত্যুর হার কমাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে।

