২৬-এর বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি একপ্রকার শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন বাণিজ্য সম্মেলন থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, দ্রুত কাজ করতে হবে, ফেলে রাখা যাবে না। আজ, সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চ থেকে শিল্পপতিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘’পেন্ডিং কিয়া তো এন্ডিং হো গ্যায়া।” তিনি বলেন, ‘’কোনও কাজ ফেলে রাখবেন না। কিছু মাথায় এলে আমি চিরকুটে লিখে রাখি। সেটা না হওয়া পর্যন্ত থামি না।’’ উত্তরে এক্সপ্যানশন বা বিস্তারের কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এগিয়ে যাওয়ায় এটাই মন্ত্র। দার্জিলিং ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে। নতুন দার্জিলিং বানান। কালিম্পং, কার্শিয়াং, সব কিছুরই এক্সপ্যানশন করুন। আপনাদেরই করতে হবে। আমরা আছি।’’
দার্জিলিং টি নিয়ে নতুন শিল্প ভাবনা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। সময়ের সাথে দার্জিলিং ব্র্যান্ড ব্যবহার করে পড়শি দেশ চা-এর ব্যবসা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেই দেশের নাম বলব না। তবে বিষয়টা জানি। ওরা ভেজাল মিশিয়ে ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করছে। টাস্ক ফোর্স তৈরি করে দিয়েছি। ওরা বিষয়টা দেখছে। মলয় ঘটক আছেন। আমরা ইতিমধ্যেই এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছি। ল্যাবরেটরি তৈরী করে পরীক্ষা করে তবেই এখানে ঢোকানো হবে সেই ব্যবস্থা করছি।’’
এরপরেই দার্জিলিং চা নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরে রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, লক্ষ্মী টি’র কর্ণধার জানান, ”দার্জিলিং চা বাংলার ও দেশের সবথেকে বড় ব্র্যান্ড। আমি জন্ম থেকে উত্তরবঙ্গে আসছি। আমাদের ফুলবাড়ী বলে একটা বাগান আছে যেখানে ছোটবেলা থেকে যেতাম। দার্জিলিং চায়ের ব্র্যান্ডিং এখান থেকেই করতে হবে। ৫০ বছর আগে সেটা জার্মানিতে হত, এখন অন্যান্য প্রদেশে হচ্ছে। দার্জিলিং থেকে দার্জিলিং চায়ের ব্র্যান্ডিং করুন যেমন আমরা মকাইবাড়ির করছি। আমাদের সাথে সহযোগিতা করে আপনাদের বাগানের নাম দিয়ে আমাদের বা আপনাদের নিজেদের দোকানে বিক্রি করুন, শিলিগুড়িতে বা দার্জিলিঙে বিক্রি করুন। এখানে এই চায়ের যা উৎপাদন তাতে এখানেই ১০০ ভাগ খরচ হয়ে যাবে। এটা দার্জিলিংকে প্রচার করার একমাত্র উপায়। আমরা যদি ভাল চা তৈরী করি তাহলে এই যেসব চা বাইরে থেকে আসছে আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা ভালো গুণমানের চা বানানোর দিকে নজর দিলেই সব হবে। মকাইবাড়ি একটা বাগানবাড়ির নাম, আরো ৮৭টি বাগান আছে। সবাই নিজের নাম দিয়ে প্রচার করুক আর তার জন্য যা করতে হবে আমি পাশে আছি।”
আরও পড়ুন-মেয়েদের জন্য টেকনো ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড রেসিডেন্সিয়াল স্কুল উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর
এরপরেই চা ব্যবসায়ীদের একটি কমিটি তৈরী করার প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”দার্জিলিং চায়ের আলাদা এক ধরণের গন্ধ আছে। আজকাল অনেক ধরণের চা হয়, জিঞ্জার টি, লেমন টি, টারমারিক টি। তাই ওটারও একটা ব্র্যান্ডিং হোক। যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা এই ধরণের চা বেশি খাবে। দার্জিলিং চায়ের নামেই ব্র্যান্ডিং করুন।” তিনি রুদ্র চট্টোপাধ্যায়কে প্রস্তাব দেন, ”দার্জিলিং চায়ের সাথে মধু ও লেবু দিয়ে হতে পারে নতুন ধরণের চা। বাগানের মালিকদের নিয়ে একদিন বসে গেট টুগেদারের মাধ্যমে আলোচনা করে এটার সমাধান করো।”
আরও পড়ুন-”আগামী ৫ বছরে আমাদের ১৫ হাজার কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান আছে”: হর্ষ নেওটিয়া
এরপরেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ”ভোটের আগে চা বাগান খুলে দেবে বলবে আর ভোট শেষ হলেই সেটা বন্ধ করে দেবে, এটা একেবারেই চলবে না। কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকের দফতরে গিয়ে জানান আমাদের ঘেরাও করতে বাধ্য করবেন না। ছোট চা বাগানের ওপর অনেক মানুষ নির্ভরশীল, অনেক শিশুর জীবন নির্ভর করছে। মলয়কে ও গৌতমকে বলব এই সমস্যার সমাধান দ্রুত করতে।”