প্রতিবেদন : নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের কাজ খতিয়ে দেখতে দিঘা সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুরে দিঘায় নামে তাঁর হেলিকপ্টার। আগামিকাল বুধবার মন্দির-চত্বরে গিয়ে সরজমিনে খতিয়ে দেখবেন মন্দির নির্মাণের কাজ। কথা বলবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গে। আলোচনা করবেন এই মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গেও।
আরও পড়ুন-আরজি কর তদন্তে সন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট, মার্চে শুনানি
২০২২-এর মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়। যদিও তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল ২০১৯ সালে। প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে তৈরি হচ্ছে বিশালাকার এই জগন্নাথ মন্দির। একেবারে পুরীর মন্দিরের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে। তবে আকার ও আয়তনে তা পুরীর মন্দির এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলকেও ছাপিয়ে যাবে। এই মন্দির তৈরির পাথর আনা হয়েছে সুদূর রাজস্থান থেকে। মঙ্গলবার বিকেলে দিঘার নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের ভিতরে ঢুকে দেখা গেল, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন শ্রমিকেরা। বিশাল এলাকা জুড়ে চলছে কর্মযজ্ঞ। তত্ত্বাবধানে রয়েছেন হিডকোর আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন-মন্দারমণি : বাড়ল স্থগিতাদেশের মেয়াদ
বঙ্গবাসীর রথ দেখা ও কলা বেচা দুই একসঙ্গে হবে এবার দিঘায় এলে। পুরীর মতো এখানেও জগন্নাথদর্শনে তৃপ্ত হবেন পর্যটকেরা। বাংলা ও দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন পালক যোগ করবে এই জগন্নাথ মন্দির। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা এসে সমুদ্র এবং জগন্নাথ দর্শন দুই-ই করতে পারবেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এখানে বাড়বে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান। হোটেল এবং পরিবহণ ব্যবস্থা বিপুল লাভের মুখ দেখবে। এমনিতেই সারা বছর দিঘায় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। এই মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হলে সেই ভিড় আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলেই আশাবাদী এখানকার ব্যবসায়ীরা। আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন আগামী বছর রথযাত্রা এখান থেকেই চালু হবে। এই অনুযায়ী কাজ চলছে। তবে এবার সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী এই মন্দির নিয়ে নতুন কী নির্দেশ দেন সেদিকে নজর থাকবে। তবে দিঘার মতো জায়গায় এই বিশাল-আকার জগন্নাথ মন্দির তৈরির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষজন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার যখন দিঘার হেলিপ্যাড ময়দানে নামে তখন হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা তাঁকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ময়দান-চত্বরে। মুখ্যমন্ত্রীও কাউকে নিরাশ করেননি তিনিও সকলকে অভিবাদন জানিয়েছেন, হাত মিলিয়েছেন, সেলফি-আবদার মিটিয়েছেন। একেবারে নিজস্ব ঢঙে মিশে গিয়েছেন আমজনতার সঙ্গে। তাঁর চেনা ট্রেডমার্কে হাত নেড়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি এবং তাঁর সরকার দিঘার মানুষের, পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষের, বাংলার মানুষের পাশে ছিল, আছে, থাকবে। এদিন দিঘার হেলিপ্যাড ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আসেন জেলাশাসক-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। এছাড়াও ছিলেন যুব নেতা সুপ্রকাশ গিরি-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।