বীরভূমের দেউচা-পাঁচামি নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব ও ডিজি

মুখ্যমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকের পরই তুঙ্গে প্রশাসনিক তৎপরতা

Must read

প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকের ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, প্রশাসনের অন্দরে তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে। প্রশাসনের কাজে যেসব ফাঁকফোকর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে ধরা পড়েছে তা মেরামত করতে এক যোগে মাঠে নেমেছে সব ক’টি দফতর। বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে যেসব দফতরকে মুখ্যমন্ত্রী চিহ্নিত করেছিলেন কাজের তৎপরতা ও অগ্রগতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে সেসব দফতরে এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। কলকাতা থেকে জেলা শুরু হয়েছে কাজের পরিকল্পনা। পরিবহণ থেকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা, পঞ্চায়েত, কৃষি বিপণন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি— সব ক’টি দফতরের মন্ত্রী অফিসাররা সকাল থেকেই দফায় দফায় নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে মাঠে নেমেছেন। চলছে একাধিক পরিকল্পনা। বীরভূম নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দেউচা-পাঁচামিতে (Deucha Pachami) গেলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ ও ডিজি রাজীব কুমার। মহম্মদ বাজারের বিডিও অফিসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন তাঁরা। ছিলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক। এদিন বোলপুর স্টেশনে নেমে মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি সরাসরি চলে যান মহম্মদ বাজার ব্লক অফিসে। সেখানে পিডিসিএলের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম, জেলাশাসক বিধান রায়-সহ সমস্ত সরকারি আধিকারিককে নিয়ে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। এখানে বৈঠক শেষ করার পরে সিউড়িতে মুখ্যসচিব সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, দ্রুত কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু করা হবে। কতটা কাজ এগিয়েছে তা স্বচক্ষে খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজ বীরভূমে এসেছি। বৈঠক থেকে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কত দ্রুত কয়লা উত্তোলন শুরু করা যায় তা সমাধানের রাস্তা খোঁজা হয়েছে। এখন অবধি প্রচুর মানুষ কয়লা শিল্পের জন্য জমি সরকারকে দিয়েছেন। এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে এই কয়লা শিল্প নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমিদাতা পরিবারদের জন্য যে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এই প্যাকেজে এলাকার মানুষ যথেষ্ট সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কয়লা শিল্প বাস্তবায়িত করতে গেলে যেখানে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন হবে নেওয়া হবে। ৩২৬ একর জমিতে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে এই দিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ডেউচা-পাঁচামি (Deucha Pachami) কয়লা শিল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় প্রত্যেকেই সন্তুষ্ট। দ্রুত যাতে এই শিল্প বাস্তবায়িত করা যায় সেই ব্যাপারে আমরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এই কয়লা শিল্প রাজ্য সরকারের কাছে এখন একটি লক্ষ্য। দ্রুত সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা এগোচ্ছি। কয়লা শিল্প বাস্তবায়িত করতে গিয়ে যাতে বেশি মানুষকে সরাতে না হয় সেই ব্যাপারেও আমরা যথেষ্ট সচেতন। এখন প্রাথমিক ধাপ। আরও ৪০ একরের উপরে জমিতে ভবিষ্যতে কাজ করা হবে। দিশম আদিবাসীর রাজ্য সভাপতি রবিন সরেন জানিয়েছেন, ডেউচা-পাঁচামি কয়লা শিল্প এলাকায় প্রচুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন, ভবিষ্যতে কয়লা শিল্পে তাঁদের কীভাবে নিয়োগ করা হবে। এমনও মানুষ রয়েছেন যাঁরা ওই এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা অথচ জমি নেই তাঁদের চাকরি দেওয়া হোক, পাশাপাশি ডেউচা-পাঁচামি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করার জন্য আমরা লিখিত আবেদন করার পাশাপাশি একটি শ্রমিক হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য আবেদন করেছি রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে। এই বিষয়ে মুখ্য সচিব আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত এ-বিষয়গুলো কার্যকর করা হবে। এদিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সমস্ত আদিবাসী সংগঠন অংশগ্রহণ করেছিল।

আরও পড়ুন- ২৫০-র বেশি আসন নিয়ে ২৬-এ ফের মুখ্যমন্ত্রী

Latest article