প্রতিবেদন : চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এ ব্যাপারে কোনওরকম আপস করা হবে না বলে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের আগেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় কী কী করতে হবে তার ১০ দফা তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্যসচিবকে পাঠালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (Manoj Pant)। বৃহস্পতিবার আরজি কর হাসপাতালে গিয়ে সেখানের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেমন তা খতিয়ে দেখেন নতুন নগরপাল মনোজ ভার্মা। তারপরে বিকেলে রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যসচিবের (Manoj Pant) এই নির্দেশিকা তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নের তরফে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। সেখানে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা কর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় স্বাস্থ্য দফতরকে দশটি পয়েন্ট উল্লেখ করে তা দ্রুত রূপায়ণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- পরিকল্পিত চক্রান্তে বাংলায় বন্যা, গণআন্দোলনের ডাক মুখ্যমন্ত্রীর
নবান্নের তরফে স্বাস্থ্য দফতরকে পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছে—
১. প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি, পানীয় জলের ব্যবস্থা, শৌচালয়, বিশ্রাম কক্ষ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা যত দ্রুত সম্ভব করতে হবে। চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও দ্রুত গড়ে তুলতে হবে।
২. সরকারি হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে বিশেষ দায়িত্ব দিচ্ছে রাজ্য।
৩. হাসপাতাল সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর সমস্ত কমিটি এবং অভ্যন্তরীণ কমিটিগুলিকে পুরোপুরি সক্রিয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪. স্বরাষ্ট্র বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা পুলিশ কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে হবে। পুলিশের টহলদারি দল যাতে বিশেষ করে রাতে হাসপাতালে মোতায়েন করা হয় তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
৫. নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব তা করতে হবে।
৬. প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ প্যানিক অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করার কথাও বলা হয়েছে। যাতে কেউ কোনও বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য পেতে পারেন।
৭. কোথায় কতগুলি বেড রয়েছে, কতগুলি প্রয়োজন তার বিস্তারিত তালিকা তৈরি করে দ্রুত রূপায়ণ করতে হবে।
৮. হাসপাতাল থেকে রোগী রেফার করার কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা যত শীঘ্র সম্ভব চালু করতে হবে।
৯. চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্য পদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত তা পূরণ করতে হবে।
১০. রোগী এবং রোগীর পরিজন-সহ হাসপাতালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে একটি কার্যকরী ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
অর্থাৎ যে দাবিগুলি আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা জানাচ্ছিলেন তা দ্রুত পূরণের কথা বলা হয়েছে নবান্নের নির্দেশিকায়। এখন দেখার, সরকারি এই নির্দেশিকার পর জুনিয়র চিকিৎসকরা কাজে ফেরেন কি না।