প্রতিবেদন : তিনি নিজে একজন চা-বাগানের কর্মচারী, ছোটবেলা থেকে মানুষ হয়েছেন চা-বাগানের সবুজ গালিচায় খেলাধুলা করে। ছোট থেকেই তাই একেবারে কাছ থেকে দেখেছেন চা শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা। ডুয়ার্সের চা-বাগানের সেই আদিবাসী যুবক প্রকাশ চিক বরাইককে মুখ্যমন্ত্রী সুযোগ করে দিয়েছেন সংসদে যাওয়ার। সেইসঙ্গে নির্দেশ দিয়েছিলেন চা শ্রমিকদের অধিকারের জন্য যেমন রাজপথে আন্দোলন করো, তেমনি সংসদেও লড়াই করতে হবে।
আরও পড়ুন-উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে হবে হাসপাতাল
চা-বাগান কর্মীদের স্বার্থে কেন্দ্র সরকারের ভুল নীতির বিরোধিতা করে অধিকার আদায়ের পথ প্রশস্ত করতে হবে। সংসদে প্রথমদিনেই মুখ্যমন্ত্রীর অর্পিত দায়িত্ব একেবারে সঠিকভাবে পালন করলেন প্রকাশ চিক বরাইক। সাবলীলভাবে চা শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরলেন তিনি। বাংলার মানবিক মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের জীবনের মান উন্নয়নের যে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন, তাও স্পষ্টভাষায় তুলে ধরেন তৃণমূল সাংসদ। চা-বাগান শ্রমিকদের জন্য চা সুন্দরী, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, পরিস্রুত নলবাহিত পানীয় জল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্রেশ নির্মাণ-সহ সার্বিক উন্নয়নের ছবি তুলে ধরেন সংসদে। তিনি বলেন, দেশের মধ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি প্রথম চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার দিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরে প্রায় পনেরো হাজার চা শ্রমিক জমির পাট্টা পেয়েছেন। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এও ঘোষণা করেছেন যে, যাঁরা ভূমির অধিকার পেয়েছেন, তাঁদের মাথার ওপর ছাদের ব্যবস্থাও তিনিই করবেন। প্রত্যেক পাট্টা প্রাপককে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বাড়ি তৈরির জন্য। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রকাশ চা শ্রমিকদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটি সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগ নিতে বলেন। চা শ্রমিকদের পিএফ-এর সঙ্গে আধার লিঙ্ক নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবার অনুরোধও করেন।
আরও পড়ুন-মানোন্নয়নে এগিয়ে শিলিগুড়ি, ৫১১ কোটির জলপ্রকল্প, ২১৮ কোটির ভূগর্ভস্থ কেবল
প্রকাশ জানান, আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে একজন চা শ্রমিক হয়েও, বিগত পাঁচ বছরে তাঁদের নিয়ে সংসদে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। আমি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের চা শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ও উদাসীনতার কথা তুলে ধরেছি। পাশাপাশি রাজ্য সরকার সীমিত সামর্থে চা-বাগানে যে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কাজ করেছে, তা বিজেপির চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি।