প্রতিবেদন : গুরুদাসপুর, উধমপুর, পাঠানকোট, উরি, পুলওয়ামা, পহেলগাঁও… বিজেপি জমানায় দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার তালিকা বেড়েই চলেছে। আর দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শপথ-নেওয়া প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনের প্রচার আর বিদেশভ্রমণেই ব্যস্ত! আর এবার সন্ত্রাসের রক্তক্ষয়ী ছোবল একেবারে দেশের রাজধানীর বুকে। গোয়েন্দা সংস্থার এই ব্যর্থতাই কি সেই অপদার্থ বিজেপি সরকারের আসল চেহারা নয়, যারা নিজেকে ‘জাতির রক্ষাকর্তা’ বলে দাবি করে? দিল্লির বিস্ফোরণ-কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অপদার্থতার যুগলবন্দিকে তীব্র নিন্দা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পরিষ্কার প্রশ্ন, নাগরিক সুরক্ষা কি শুধু বিজেপির বক্তৃতাতেই থাকবে? ২০১৪ সালের পর থেকে বিজেপির শাসনে একটা পর একটা সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ চলছে আর প্রতিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের একই অজুহাত— ‘তদন্ত চলছে’! আমাদের প্রশ্ন একটাই— এই তদন্তে নাগরিকের প্রাণ ফেরে কি? নাগরিক কি সুরক্ষিত হয়? দেশ জ্বলতে থাকে, আর প্রচারমন্ত্রী ফটোশ্যুট করে। নোংরা রাজনীতির খেলায় মাতে। আর সেই ৫৬ ইঞ্চির ছাতির গল্প? সে তো কবেই চুপসে গিয়েছে! দেশ জুড়ে মানুষের হাহাকার, নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে হোম মিনিস্টার!
আরও পড়ুন-আগামী বছর আরও বড় কিছু করব:Kiff-এর সমাপ্তিতে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
সোমবার রাজধানী দিল্লির লালকেল্লা চত্বরে সন্ত্রাসী ধামাকায় তোলপাড় গোটা দেশ। বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ১৩। ছিন্নভিন্ন শবদেহগুলি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। ওদিকে, জখম অবস্থায় দিল্লির এলএনজেপি হাসপাতালে ভর্তি আরও জনা ১৫। বিস্ফোরণের পর টনক নড়েছে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলির! তদন্তভার নিয়েছে এনআইএ। ইউএপিএ আইনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বিস্ফোরণের নেপথ্যে উঠে এসেছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ-এর যোগসূত্র। ইতিমধ্যেই রাজধানীর বিস্ফোরণে যুক্ত জঙ্গি সন্দেহে ১৫ জন চিকিৎসক-মৌলবিকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। ধৃতেরা সকলেই জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের ‘চিকিৎসক মডিউল’-এর সদস্য বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে যুক্ত সন্দেহে কানপুর থেকে আরও এক চিকিৎসক-পড়ুয়া মহম্মদ আরিফকে আটক করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আগেই ধৃত মহিলা চিকিৎসক শাহিন শাহিদের। শাহিন ছাড়াও একাধিক ‘জেহাদি’ গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মহম্মদ আরিফের!
আরও পড়ুন-শীতের আমেজ রাজ্যে, পারদ নিম্নমুখী
অন্যদিকে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আই-২০ গাড়িটি ছাড়াও একটি লাল রঙের ফোর্ড ইকোস্পোর্ট গাড়িরও খোঁজ মিলেছে হরিয়ানার খাণ্ডাওয়ালিতে। সেই গাড়ির সূত্র ধরেও এক যুবককে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সেই গাড়ি-সহ খাণ্ডাওয়ালিতে তল্লাশি চালান এনআইএ-র তদন্তকারীরা। তল্লাশি চালানো হয়েছে হরিয়ানার ধৌজে, আল-ফালহা বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেখানেই কর্মরত ছিল বিস্ফোরণে আত্মঘাতী জঙ্গি-চিকিৎসক উমর নবি মহম্মদ-সহ ধৃত মুজাম্মিল মহম্মদ, শাহিন শাহিদরা। এদিন বম্ব স্কোয়াডকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিরুনি তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লির ছয় জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষেছিল জেহাদিরা। সেই পরিকল্পনায় শামিল ছিল শাহিন, মুজাম্মিল এবং উমর। আবার বিস্ফোরণে যুক্ত আরও একটি ব্রেজা গাড়ির খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা। উমরের নামে রেজিস্টার্ড ছিল ওই গাড়ি।

