স্টেডিয়াম, ক্রীড়াবিদদের কর্মসংস্থান থেকে পেনশন: ‘খেলা হবে দিবসে’ স্মরণ করিয়ে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রী, অভিষেকের

Must read

সুস্থ শরীর গড়তে খেলাধূলার গুরুত্বের কথা ছোট শিশুরাও জানে। তবে আজকের দিনে খেলাধূলা শুধুই যে আর শরীর গঠনে ভূমিকা নিয়েই থেমে নেই, তা অনুধাবন করেই খেলাধূলার জন্য ব্যাপকভাবে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এমনকি খেলাধূলার প্রয়োজনীয়তাকে মনে করিয়ে খেলা হবে দিবসও ঘোষণা করেছিলেন ১৬ অগাস্ট। এবছরের ‘খেলা হবে দিবসে’ (Khela Hobe Dibas) ফের একবার রাজ্যের ক্রীড়াবিদ থেকে ক্রীড়াপ্রেমীদের শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর। সেই সঙ্গে ‘খেলা হবে দিবসে’র শুভেচ্ছা জানালেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন ক্রীড়াপ্রেমী অভিষেকের ছবি।

২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যের ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী যে সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ করেছেন, খেলা হবে দিবসে সেই সব প্রকল্পকে স্মরণ করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, আজ ‘খেলা হবে দিবস’ (Khela Hobe Dibas)। এই উপলক্ষে সকল ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়াপ্রেমীকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান স্পোর্টিং সহ রাজ্যের গ্রাম-শহরের সকল ক্লাবকেও এই দিনে আমার শুভেচ্ছা জানাই। ২০১১ সালের পর থেকে বাংলায় অন্যান্য নানান ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নয়ন করা হয়েছে। তার ফলে আজ বাংলা ফুটবল থেকে শুরু করে জিমন্যাস্টিক্স, যোগ ব্যায়াম, আর্চারি, টেবিল টেনিস – সব কিছুতেই জাতীয় স্তরে এগিয়ে আছে।

রাজ্যের ধারাবাহিক পরিকল্পনায় কীভাবে এই জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, তা বর্ণনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, আমাদের সময়ে যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের বাজেট বরাদ্দ ৬.৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে (২০১১ সালের ১২৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫-২৬ সালে হয়েছে ৮৪০ কোটি টাকা)। আমাদের সময়ে হয়েছে ৫৮টি স্টেডিয়াম, ৪২টি যুব হোস্টেল, ৫টি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ৭৯৫টি মিনি-ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ৪ হাজারেরও বেশি মাল্টি-জিম, ৬টি সুইমিং পুল, ৪২৩টি খেলার মাঠ। ৮টি স্পোর্টস অ্যাকাডেমি শুরু করা হয়েছে যার মধ্যে আছে ফুটবল, মহিলা ফুটবল, তীরন্দাজী, টেনিস, টেবিল টেনিস, সাঁতার, রাইফেল শ্যুটিং এবং ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি।

আরও পড়ুন- বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে হেনস্থার মুখে

শুধুমাত্র পরিকাঠামো নয়, রাজ্যের সরকারের খেলাধূলার অনুপ্রেরণার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গ বিভূষণ’ দেওয়া হয়েছে এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য তাদের ২৭ কোটি টাকার বেশি অনুদান দেওয়া হয়েছে। ‘খেলাশ্রী’ প্রকল্পের অধীনে খেলাধুলার উন্নতির জন্য ৩৪ হাজারেরও বেশি ক্লাবকে অনুদান (প্রতি ক্লাবকে ৫ লক্ষ টাকা) দেওয়া হয়েছে। খেলাধুলার প্রসারে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ১,৩৫২টি কোচিং ক্যাম্পকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে এবং ৩৪টি ক্রীড়া সংস্থাকে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলের ২১ জন খেলোয়াড়কে আমরা রাজ্য পুলিশে চাকরি দিয়েছি।যুবকদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে এবং পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের মানুষকে মূলস্রোতে আনতে আমরা সুন্দরবন কাপ, জঙ্গলমহল কাপ, হিমাল-তরাই-ডুয়ার্স কাপ এবং রাঙামাটি কাপ আয়োজন করছি। শুধু তাই নয়, যারা ভালো খেলছে তাদের অনেককেই সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে।

শুধুমাত্র খেতাব বা সম্মান নয়। রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সময়ে খেলাধূলার জন্য আর্থিক সহযোগিতায় যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তার তথ্য তুলে মুখ্য়মন্ত্রী জানান, আমরা বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের বিভিন্ন পুরস্কার দিয়ে থাকি। ৪৬০ জন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ‘খেল সম্মান’, ‘বাংলার গৌরব’, ‘ক্রীড়াগুরু’, ‘জীবনকৃতি’ পুরস্কার পেয়েছেন। ১,৫৮০ জন স্বনামধন্য এবং অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদকে মাসিক পেনশন দেওয়া হচ্ছে। বাংলার এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহীদের জন্য রাধানাথ শিকদার-তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। মহিলা পর্বতারোহীদের জন্য চালু হয়েছে ‘ছন্দা গায়েন সাহসিকতা পুরস্কার’ (ছন্দা গায়েন ছিলেন প্রয়াত তরুণী পর্বতারোহী)। আমরা গর্বিত যে আমাদের সময়ে ২১ জন বাঙালি পর্বতারোহী এভারেস্ট জয় করেছেন। ছেলেমেয়েদের কাজের সুযোগ করে দেবার জন্য ১২টি যুব বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৯১২টি যুব কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও চালানো হচ্ছে। আগামীদিনেও বাংলায় খেলাধুলোর উন্নয়নে আমরা এভাবেই কাজ করে যাবো।

Latest article