সোমনাথ বিশ্বাস, শালবনি: গতকাল শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বীরবাহা হাঁসদার কনভয়ে হামলা হয়। এপ্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Cm Mamata Banerjee)। তিনি জানান, কুড়মিরা নয়, শুক্রবার রাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (Abhishek Banerjee) ও মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার কনভয়ে হামলার ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে শনিবার শালবনিতে অভিষেকের সঙ্গে একই মঞ্চে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সভা থেকে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করে তিনি (Cm Mamata Banerjee) বলেন, “আদিবাসী কন্যা বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভেঙেছে। আমি ওকে দিয়ে অনেক কাজ করাই। ওর উপর হামলা হয়েছে। ওর গাড়ি ভেঙেছে। অনেক সংবাদমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমি এখনও বিশ্বাস করি, আমার কুড়মি ভাইয়েরা এটা করেনি। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে হামলা হচ্ছে। গদ্দারি করে টাকার জোরে জাতি-সংঘাত লাগিয়ে বাংলাকে শেষ করতে পারবে না, তৃণমূলকেও নয়।“ এর পরেই আদিবাসীদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে কী কী উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান দেন মুখ্যমন্ত্রী। বাম আমালের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আদিবাসী, মাহাত, হাঁসদা, মুণ্ডাদের সবাই অনাহারে ছিলেন জঙ্গলমহলের। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কত প্রকল্প হয়েছে। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষী ভান্ডার। সবাই এই সুবিধা পান।“ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, স্কুল করতে বললে করে দেবেন। কুরমানি ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে বললে করে দেবেন। কিন্তু হিংসা বরদাস্ত করবেন না।
আরও পড়ুন: জনগণের হাতে ইভিএমের কন্ট্রোল আছে, মোদিকে একহাত নিয়ে বললেন অভিষেক
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “মণিপুরে জাতি-হিংসা করেছে। অনেক মানুষ মারা গিয়েছে। আমি মনিপুর যেতে পারতাম, কিন্তু ওরা যেতে দেবে না। যেমন অসমে যেতে দেয়নি।“ এরপরেই বিজোপির নাম না করে তোপ দেগে তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, “এখানেও টাকা ছড়িয়ে জাতি-হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি জাতি-হিংসা বরদাস্ত কর না।“ বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাহাড় আলাদা করে দাও, রাজবংশী-কামতাপুরী আলাদা করে দাও। এখন আবার কুড়মি আর আদিবাসীদের আলাদা করতে চাইছে বিজেপি। জাতি-হিংসা বাঁধিয়ে আগুন লাগাতে চায়। টাকা দিয়ে এসব করছে। রক্ত ঝরবে। দিল্লি থেকে সেনা আসবে। গুলি করবে। কোনও মামলা করতে পারবেন না। আইন আছে। আমি সব সহ্য করতে পারি, কিন্তু রক্ত সহ্য করতে পারি না। আমি চোখ রাঙানি সহ্য করি না। আমাকে চমকায় কেন্দ্র।“ কেন্দ্রের মোদি সরকারের মেয়াদ আর ৬ মাস বলে কটাক্ষ করেন মমতা। একই সঙ্গে বীরবাহা হাঁসদার উপর হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবি জানান তিনি।