“বাংলার একজনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গেলে কেন্দ্রে বিজেপির সরকার ভেঙে দেব”- মঙ্গলবার বাংলার ভোটাধিকার রক্ষার্থে আয়োজিত মহামিছিলের পরের জোড়াসাঁকোর মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (cm mamata banerjee)। তাঁর হুঁশিয়ারি “মোদিবাবু, শাহবাবুকে খুশি করতে গিয়ে কুর্সিবাবু ইতিহাস তৈরি করতে চাইছেন! আপনার ইতিহাস পাতিহাস হবে।” বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন “এতদিন পর প্রমাণ দিতে হবে আমরা ভারতের নাগরিক কিনা?”
এদিন রেড রোড থেকে রানি রাসমণি অ্যাডিনিউ হয়ে, ডোরিনা ক্রসিং হয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে মিছিল (Rally) পৌঁছয় জোড়াসাঁকোয়। সেই মঞ্চের সামনের SIR-এর আতঙ্কে আত্মঘাতী ৭জনের স্মৃতি-বেদীতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (cm mamata banerjee) ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, “বাংলার দু’কোটি মানুষের নাম কেটে বিজেপি বাংলা দখলের ছক কষছে। ওরা হিসেব কষে নাকি দেখেছে ওদের ভোট ৩৯ শতাংশ আর আমাদের নাকি ৪0 শতাংশ। ২কোটি নাম বাদ দিলে নাকি ক্ষমতা দখল করতে পারবে। আমি বলে যাচ্ছি, ওরা যেভাবে এসআইআরের নাম করে মানুষের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে তাতে আমাদের হারানো তো দূরে থাক, ওদের নিজেদের ভোটও এবার আমাদের দিকে আসবে। কারণ, যেভাবে মানুষকে ওরা ভিটে মাটি উচ্ছেদ করতে চাইছে, তাতে ওদের ঘরেও বিদ্রোহ শুরু হয়ে গেছে।”
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাধীনতার আন্দোলনের সময় বিজেপি কোথায় ছিল? ওদের তো তখনও জন্মই হয়নি! ওরা কি করে জানবে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস! ওরা সবচেয়ে বড় জনগণের টাকা লুঠেরা জোতদার!”
নাম না করে বিজেপি নেতাদের মুর্খ, অর্ধ শিক্ষিত বলে কটাক্ষ করে কমিশন-বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তোলেন মমতা। বলেন, “এবারেই তো জিতত না। হঠাৎ করে ইলেকশন কমিশন ওদের ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়িয়ে দিল, তাতেও কটা বেশি আসনে জিতেছে? আসলে ওরা জানে মানুষের ভোটে জিততে পারবে না, নোটে জিতবে। তাই এসব করছে।”
আরও পড়ুন- মালগাড়ি-যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ! বিলাসপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত ৬
ফের নাম না করে আমিত শাহকে মীরজাফর বলে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “আমি ইতিহাসের মীরজাফরের কথা বলছি না, আমি এখনকার মীরজাফরের কথা বলছি, যে সারা দেশে দাঙ্গা বাঁধাচ্ছে। মীরজাফরবাবু, আপনি অসমে কেন এসআইআর করলেন না?” একই সঙ্গে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারকে কুর্সিবাবু বলে কটাক্ষ করে তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, “রোহিঙ্গারা এলে কোনটা দিয়ে আসবে। আসলে তো নাগালান্ড, মিজোরাম দিয়ে আসবে, তাহলে নর্থ ইস্টে কি এসআইআর করেছো? বাংলাদেশিরা তো এলে ত্রিপুরা, অসম হয়ে আসবে। সেখানে এসআইআর হল না কেন? ক্ষমতায় থেকে নিজেদের গোখরো ভাবছো! অপেক্ষা করো, মানুষের ছোবল খাওয়ার জন্য।”
সচিত্র ভোটাধিকারের দাবিতে তাঁর আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা মারা গিয়েছে তাঁদের নাম বাদ যাক, কিন্তু তা বলে যোগ্যদের নাম বাদ দিয়ে দেবে! এত বড় স্পর্ধা। এসআইআর হোক, কিন্তু বেছে বেছে বিরোধী রাজ্যে এসআইআর করার জন্য কেন এত তাড়াহুড়ো?”

