ক্যাগ রিপোর্ট (CAG Report) নিয়ে এবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার অর্থবিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি জানিয়ে দেন, ক্যাগ রিপোর্টে (CAG Report) একশো শতাংশ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। এই রিপোর্ট তিনি মানেন না। একইসঙ্গে আগামী পয়লা মার্চ ২১ লক্ষের বদলে ২৪ লক্ষ কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত একশ দিনের শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিন বাজেট নিয়ে বিরোধী বিজেপির যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একশো দিনের কাজে ৫০ দিন কাজ দেওয়া হবে বলে যেটা বলা হয়েছে বাজেটে সেটা তো কন্টিনিউয়াস প্রজেক্ট। কর্মশ্রী প্রকল্পের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ওরা জানে না, তাই মিথ্যা কথা বলেছে। আর পথশ্রী প্রকল্পের টাকা সম্পূর্ণ রাজ্যের টাকা, কেন্দ্রের এক টাকাও নেই।”
আরও পড়ুন- রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের, দেবকে তলব ইডি-র
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন এবারের রাজ্য বাজেট ঐতিহাসিক। কেন্দ্রের বাজেট জনবিরোধী, অর্থনীতির জাগলারি। বিধানসভায় দুই বাজেটের তুল্যমূল্য আলোচনা করে তথ্য, পরিসংখ্যান সহ এই দাবি করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, নারী ও শিশু কল্যাণ, কৃষক , আদিবাসী উন্নয়ন, খাদ্যে ভর্তুকি সব খাতেই বাজেটে বরাদ্দ কমিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেটে যা বরাদ্দ হচ্ছে তাও খরচ করা হচ্ছে না। উদাহরন স্বরূপ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তফসিলি জাতি উপজাতি কল্যাণে কেন্দ্রের আমব্রেলা প্রকল্পে গত বছরের বাজেটের ৪০ শতাংশই খরচ করতে পারেনি কেন্দ্র। সংখ্যালঘু উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দের মাত্র ১২ শতাংশ খরচ হয়েছে, কৃষকদের বরাদ্দের ৫০ শতাংশই খরচ করা হয়নি। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মোট বরাদ্দের মাত্র ২৯.৪ শতাংশ খরচ হয়েছে । মহিলা সুরক্ষায় গৃহীত মিশন শক্তি প্রকল্পের ৭৩ শতাংশের বেশি টাকা এখনও অব্যবহৃত বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার খাদ্যে ভর্তুকি ছাটাই করছে যার ফলে দ্রব্যমূল্য বাড়বে মুদ্রাস্ফীতির থাবা আরও চওড়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় সরকার জমিদারদের ঋণ মুকুব করছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। অন্যদিকে রাজ্য বাজেটে, মহিলা থেকে কৃষক কল্যাণ, স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা সব খাতেই বরাদ্দ বহুগুণে বেড়েছে তিনি জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাজেট ভোটমুখী বাজেট নয়। ওটা আপনারা করেন। তারপরে পালিয়ে যান।” তিনি জানান, আর্থিক শৃঙ্খলা এনে রাজ্যের জি এস ডি পি সাড়ে তিনি শতাংশের কাছাকাছি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। কর বাবদ আয় বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ। মূলধনী ব্যয় বেড়েছে আট শতাংশের কাছাকাছি। সারাদেশের ভিত্তির হার যেখানে ৫ শতাংশ এরাজ্যে তা সাত শতাংশ কৃষকদের আয় ৩ গুণ বেড়েছে। রাজ্যের ঋণের বোঝাও কমিয়ে আনা হয়েছে। ঋণ ও মাথাপিছু আয় এর অনুপাত কমে হয়েছে ৩৭ শতাংশ। যেখানে সর্বভারতীয় হার ৫৮ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী জানান বাম আমলে যেখানে ৫৭ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে ছিলেন সেখানে এখন মাত্র ৮% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে রয়েছেন। এই হার শূন্য করাই সরকারের লক্ষ।