রেল মন্ত্রক দেশের রেলকে অভিভাবকহীন করে রেখেছে শিলিগুড়ি রওনা দেওয়ার আগে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “গোটা রেলটাই অভিভাবকহীন। রেলকে দেখতে পাওয়া যায় উদ্বোধনের সময় শুধু। এখানে শুধুই ফ্যাশান। এরা যাত্রীদের কোনও দেখভাল করে না (kanchanjunga express accident)। এমনকি এরা রেল আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিকর্মী, নিরাপত্তা কর্মী থেকে সাধারণ কর্মী, কারো খেয়াল রাখে না। তাঁদের পুরোনো অবসরকালীন ভাতাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি রেলের কর্মী, আধিকারিকদের পাশে পুরোপুরিভাবে রয়েছি। তাঁরা তাঁদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে কাজ করেন।” তদন্তের আগেই যেখানে মৃত চালককে কাঠগড়ায় তুলেছে, সেখানে রেল দফতরের অবহেলাকে কাঠগড়ায় তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রেল থেকে বিমান পরিবহনের চূড়ান্ত গাফিলতি। একদিকে রেলের অব্যবস্থায় দুর্ঘটনা (kanchanjunga express accident) এড়ানো যায়নি। অন্যদিকে বাগডোগরা বিমানবন্দর সচল হলেও সেখানে কলকাতা থেকে যাতায়াত চূড়ান্ত সমস্যা বহুল, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে সোমবারই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরই জেলা পুলিশ-প্রশান থেকে স্বাস্থ্য বিভাগকে উদ্ধারকাজ থেকে চিকিৎসায় দ্রুত হাত লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু যে কোনও দুর্বিপাকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সব সময়ই নিজে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তিনি বলেন, “সকাল ৯টা থেকে যখন কেন্দ্র সরকার খবরও পায়নি তখন থেকে রাজ্য প্রশাসন অ্যালার্ট ছিল। সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।” তবে বিমান না থাকার জন্য ঘটনাস্থলে বিকালে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন- বারবার ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুমিছিল, রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি
সোমবার বিকালে কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানে বাগডোগরা পৌঁছাবেন তিনি। বিমান বন্দর থেকে রওনা দেওয়ার আগেই কলকাতা থেকে বাগডোগরার বিমান পরিবহন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, “এত দুর্দশা ফ্লাইটের আমার জানা ছিল না। আমরা ফুয়েল চার্জ ফ্রি করে দিয়েছিলাম। এবার ভাবব। একটা উত্তরবঙ্গ যেতে বিমান বন্দরে ফ্লাইট নেই। প্রশাসনিক অবহেলা।”
সেই সঙ্গে দুর্ঘটনায় কেন্দ্র সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতির বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যেখানে দুর্ঘটনা হয়েছে, তার একটু দূরেই ভয়াবহ গাইসাল দুর্ঘটনার জায়গা, স্মরণ করিয়ে দেন মমতা। সেই সঙ্গে এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আরও বেশি হতে পারত বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এক্ষেত্রে রেল তথা কেন্দ্র সরকারের অব্যবস্থা ও অবহেলাকে দায়ী করেন তিনি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস তিনি তৈরি করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেই তাঁর দাবি, সেই ব্যবস্থা চালু থাকলে এক লাইনে দুটি ট্রেন এসে গেলেও দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিল।
সোমবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ভর্তি আহতদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। ইতিমধ্যে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।