আমি তো প্রশ্নের উত্তর দিতাম কিন্তু ওদের অন্য উদ্দেশ্য ছিল, ছ’পিসের অভব্যতা, আঁচড়ও কাটল না মুখ্যমন্ত্রীর সফরে

Must read

কুণাল ঘোষ, লন্ডন (মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী): অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাম-বামের পরিকল্পিত বাঁদরামি ও অসভ্যতার ঘটনায় চারিদিকে ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছে। বাংলায় তো বটেই, প্রবাসেও এই ঘটনায় নিন্দায় মুখর সকলে। প্রবাসী ভারতীয় ও বাঙালিদের মতে, কারও বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু একজন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি যখন বাংলার প্রতিনিধি হয়ে, সর্বোপরি ভারতবর্ষের প্রতিনিধি হয়ে বিদেশে আসছেন, তখন তাঁর সামনে শুধুমাত্র রাজনৈতিক নাটক ও গিমিক করার জন্য এই ধরনের অভব্য আচরণ করা উচিত নয়। এতে আর যাই হোক সেই দলের মান বাড়ে না বরং কমে। আজ ফের প্রবল ঠান্ডায় লন্ডনের রাজপথে বেরিয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও। বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ডে সকলের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ওই ৬ পিসের অন্য উদ্দেশ্য ছিল। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই ৬ পিস রাম – বাম যখন পোষ্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে অসভ্যতা করছিল সেসময় অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ বলেন, ওদের বের করে দিচ্ছি আমরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃপক্ষকে থামিয়ে বলেন, ওরা কিছু একটা বলতে এসেছে বলুক। এটাই তো গণতন্ত্র। যদিও উপস্থিত জনতা ওই ৬ পিসকে তাড়া করে বের করে দেয়। এই ঘটনায় সকলেরই বক্তব্য যদি কিছু বলার থাকত প্রশ্নোত্তর পর্বে সেই প্রশ্ন করা যেতেই পারত তখন বলতে দেওয়া না হলে, তখন চিৎকার চেঁচামেচি করলে তার একটা মানে দাঁড়াত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাকে তুলে ধরছেন, বাংলার মানুষের কথা তুলে ধরছেন, সে সময় অযথা এই ধরনের নোংরামো কোনওমতেই বরদাস্ত করা যায় না। এদিন লন্ডন থেকে রওনা হওয়ার আগে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাত্র ৬ পিস রাম-বাম ছেলেমেয়ের এই অসভ্যতামির কারণে মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে তাদের পূর্বসূরিদের। এমনকী বিলেতে যেসব পুরনো বামপন্থী কর্মী ও সমর্থকরা রয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসেই থাকেন, তাঁরাও এই ঘটনায় তিতিবিরক্ত। বিভিন্ন চ্যাট গ্রুপ এবং আরও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে যে দীর্ঘ পরিকল্পনা করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডনে সফরের সময় এই ধরনের গন্ডগোল পাকানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে না দেওয়া। গন্ডগোল চিৎকার চেঁচামেচি ইত্যাদি করে ভাষণ থামিয়ে দেওয়া। কিন্তু এই অপরিণত অন্ধ রাম-বামের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করে খবরের লাইব্রেরিতে আসার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং ফুটেজ খেয়ে হিরো হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তার কোনওটাই হতে দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অত্যন্ত সংযম দেখিয়ে এবং পরিণত রাজনীতিবিদের ভূমিকায় নেমে গোটা বিষয়টিকে তিনি হালকা চালে ট্যাকল করেছেন। গণতান্ত্রিক সৌজন্য বজায় রেখে উপস্থিত জনতাকে বলেছেন, ওদের বের করে দেবেন না, থাকতে দিন। কিন্তু উপস্থিত পড়ুয়া ও জনতা কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ৬ পিস নিকৃষ্ট প্রজাতির রাম-বামের আপদকে বের করে দেওয়া হয় হল থেকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণ ঠিকঠাক মতোই শেষ করেন। তার আগে অবশ্য এই শিশু বিপ্লবীদের পরামর্শ দিয়েছেন আগে বাংলায় তাদের গডফাদার ও রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী হয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইতে নামতে। এর সঙ্গে বুঝিয়ে দিয়েছেন এভাবে তাঁকে দমানো যাবে না।

আরও পড়ুন-অক্সফোর্ডে রাম-বামের বাঁদরামির প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলা, রাজপথে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে যখন এই পরিকল্পিত নোংরামো চলছে, সে সময় মাথা ঠান্ডা রেখে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে অভিভাবকের মতো গোটা বিষয়টিকে সামলানোর জন্য সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন।। একটুও না রেগে কোনও খারাপ কথা না বলে যেভাবে হাসিমুখে কার্যত তাদের দিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তাও অবাক করেছে অক্সফোর্ডকে লন্ডনকে , কলকাতাকে , ভারতবর্ষকে। আজ রাতের বিমানে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সফরকারী দলের সদস্যরা। আগামী কাল তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা। তার আগে সকালে লন্ডনে রাজপথে ফের একবার হেঁটে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Latest article