প্রতিবেদন : বাংলাভাষার উপর অত্যাচার মানব না। বিদ্যাসাগর-রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাংলাভাষা। তার উপর আক্রমণ হলে ছেড়ে কথা বলব না আমরা। বাংলাকে কেউ তাচ্ছিল্য করলে আমরা প্রাণ দিতে রাজি, কিন্তু বাংলার সম্মান নিয়ে খেলা করতে দেব না। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবসে শপথ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata banerjee)। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশেই বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে রাজ্যে-রাজ্যে।
মঙ্গলবার বীরভূমের ইলামবাজারে প্রশাসনিক জনসভা ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে বাংলার অস্মিতা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata banerjee)। একযোগে গর্জে উঠলেন কেন্দ্রীয় সরকার ও ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, বাংলা ও বাঙালির প্রতি তোমার এত বিদ্বেষ, তোমাকে বাংলার মানুষই জবাব দেবে। মনে রেখো, বাংলা কারও দয়ায় বাঁচে না। বাংলা স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্ম দিয়েছে। বাংলা নবজাগরণের জন্ম দিয়েছে। যখন ক্ষুদিরাম শহিদ হয়েছিলেন, তখন তোমরা কোথায় ছিলে? ইংরেজদের দালালি করছিলে। আর এখন তোমরা ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’-এর নামে ‘বেটি জ্বালাও’ কর্মসূচি করছ।
এরা ভোট এলেই বলে ১৫ লক্ষ টাকা করে ব্যাঙ্কে দেব। কিন্তু ভোট চলে গেলে নো পাত্তা। ভোট এলেই এটা দেব, ওটা দেব। ভোট চলে গেলেই সব কো মারেঙ্গে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শুনে রাখো, বাংলার ভিক্ষা করার দরকার নেই। বাংলা মাথা নিচু করতে জানে না। বাংলা মাথা উঁচু করে লড়াই করে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে দেন, ভোটার লিস্টের কাজ সব ভাল করে করবেন। অসুবিধা হলে বিএলও-দের বলবেন। বলছে কি না সবাই রোহিঙ্গা! ওদেরই জিজ্ঞেস করুন রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কত।
আরও পড়ুন- আসন্ন খরিফ মরসুমের ‘নতুন কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে অর্থ সাহায্য শুরু, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে অসম, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, রাজস্থান এবং দিল্লির ডবল ইঞ্জিন সরকার বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। সমস্ত নথি থাকা সত্ত্বেও জোর করে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখছে। থ্রেট করা হচ্ছে। আমি চাই ওরা ফিরে আসুক। গুরগাঁও, হরিয়ানায় দশটা ডিটেনশন ক্যাম্প করা হয়েছে। অসমের লক্ষ লক্ষ মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখেছে। তার মধ্যে সব ধর্মের মানুষ ছিল। আজকে প্রত্যেকের নাম নতুন করে ভোটার লিস্টে তোলার বাহানায় ঘুরপথে এনআরসি চালু করার চেষ্টা করছে। বাংলায় কেউ যেন ভোটার লিস্টের নাম তুলতে বাদ না রাখি। নাম বাদ গেলে আমি ওদের ছেড়ে কথা বলব না। এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার। ছাত্র-ছাত্রীরা যারা ১৮ বছরে পা দেবে তাদের সবাইকে ভোটার লিস্টে নাম তুলতে হবে এটা আপনাদের রক্ষাকবচ। সংখ্যালঘুরা যারা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের শুধু ইদে আসলে হবে না। এখানে এসে থাকার চেষ্টা করুন। ভোটার লিস্টে নামটা তুলতে হবে। অন্যরা খেতে পেলে আপনারাও পাবেন। রাজবংশী-মতুয়াদের উপর অত্যাচার হয়েছে। শীল পরিবারের উপর অত্যাচার হয়েছে। অসম সরকার বাংলার মানুষকে নোটিশ পাঠাচ্ছে। এদের লজ্জা করে না! এদের ধিক্কার জানাই।