শিক্ষা ক্ষেত্রে বাধা দিয়ে রাজ্যপাল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত আনলে আমি রাজভবনের সামনে ধর্না দেব- তো!” মঙ্গলবার, ধনধান্য স্টেডিয়ামে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM-Governor)। তিনি বলেন, “মধ্য রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদলে দিচ্ছেন রাজ্যপাল। প্রাক্তন বিচারপতিকে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসাচ্ছেন, যেন ওনার জমিদারি!” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আরও জানান, “কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আপনার কথা শুনলে আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব।… শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হলে আপনি দেবেন তো!”
এদিন কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী (CM-Governor) বলেন, ‘‘শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্তব্ধ করিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন রাজ্যপাল। আমরা এই চক্রান্ত মানব না। উনি কী ভাবছেন? মুখ্যমন্ত্রীর থেকেও বড়? সে উনি বড় হতেই পারেন।’’ অর্থনৈতিক অবরোধ অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি বলে দিচ্ছি, এই যদি চলতে থাকে তা হলে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। দেখি কে চালায়।’’ মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, রাজ্যপাল একটি সাংবিধানক পদ। তিনি রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলেও অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। এর পরেই তীব্র আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও বিশ্ববিদ্যালয় রাজভবেন নির্দেশ মেনে চললে আর্থিক বাধা তৈরি করব। বেতন কে দেয়?’’
আরও পড়ুন-শিক্ষক দিবসে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী
উপচার্য নিয়ে নিয়ে রাজ্যপালের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মধ্যরাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হয়ে গেল। কেরলের এক জন আইপিএসকে উপাচার্য করা হয়েছে। রবীন্দ্রভারতীতে একজন বিচারপতিকে উপাচার্য করে দিয়েছে। এই চক্রান্ত আমরা মানব না।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেরল থেকে এনে অধ্যাপক করবেন, ডিন করবেন ঠিক আছে। সব বিল আটকে রাখবেন। আমরা বার বার পাঠিয়ে রেখেছি। বাধ্য হলে রাজভবনের সামনে ধর্না দেব। আমি এডুকেশন সিস্টেমকে ধ্বংস হতে দেব না। ছাত্রছাত্রীরা আজ সার্টিফিকেট পাচ্ছে না। অকাজের কাজ বেশি হচ্ছে।” সিভি আনন্দ বোসকে তীব্র কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি দরকার হলে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে পড়াশোনা করুন। আগে ছাত্র হোন, পড়াশোনা করুন। তারপরে বাংলা নিয়ে কথা বলবেন।”
বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর না করা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আজকের দিনে এভাবে কথা বলছি বলে আমি দুঃখিত। কিন্তু চার পাঁচ মাস ধরে এরকম চলছে। উনি একটা বিলও ফেরত পাঠান না। প্রত্যেকটা বিল আটকে রেখে দেন। ভেরি ডিফিকাল্ট। একে বলছে তুই ভিসি হয়ে গেলি। যেন জমিদারি! রান্না করতে জানে না, বিরিয়ানি বানাতে গিয়েছে!”
আনন্দ বোসকে (Governor CV Ananda Bose) নিশানা করে মমতা বলেন, “মনে রাখবেন, আপনি যে রাজভবনে বসে রয়েছেন, তার টাকাটাও আমরা দিই! যাঁদের কেরালা থেকে নিয়ে আসছেন তাঁদের প্লেনের খরচও জনগণের টাকায় হচ্ছে।”