প্রতিবেদন : আদতে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজয়া সম্মিলনী (Vijaya Sammilani- Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার উত্তীর্ণর সেই মুক্তমঞ্চ থেকেই নাম না করে বিজেপিকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Vijaya Sammilani- Mamata Banerjee)। বিজেপির এজেন্সি পলিটিক্স-বাংলার পুজো নিয়ে মিথ্যাচার-গান্ধীজিকে অসুর বানিয়ে চরম অশ্রদ্ধা— সব নিয়েই এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন নেত্রী। সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, উৎসব শেষ হলেই উন্নয়নের লড়াই দিয়ে ঝাঁপাবে তৃণমূল কংগ্রেস। সরব হবে কুৎসার বিরুদ্ধে।
এজেন্সি পলিটিক্স : কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কোমর ভাঙতে চাইছে বিজেপি। এই অভিযোগ জারি রেখেই বৃহস্পতিবার আরও একবার নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, আজ ক্ষমতায় আছ তাই তুমি এজেন্সি পাঠাচ্ছ। কাল যখন ক্ষমতায় থাকবে না তখন তোমার বাড়িতে এজেন্সি যাবে। এরা বিরাট তিরন্দাজ। ভেবেছিলাম বলব না। আজ বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়েও কয়েকটা কথা বলতে বাধ্য হলাম। চারটে বাইক নিয়ে বেরোলাম, পুলিশকে লাঠি দিয়ে মারলাম আর আন্দোলন হয়ে গেল! অত সোজা নয় আন্দোলন করা। মানুষের পাশে থাকা। সাফ কথা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
পুজোয় ৫০ হাজার কোটির ব্যবসা : এবছর দুর্গাপুজোয় ৫০ হাজার কোটির ব্যবসা হয়েছে, একথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই পুজোতেই সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষদের উপার্জন হয়। ফুচকা বিক্রেতা থেকে ঢাকি— সব পিছিয়েপড়া শ্রেণির মানুষের রোজগার হয়েছে। যারা টাকা ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়ার বিরোধিতা করে আদালতে গিয়েছিল, বলেছিল, মমতাজি বঙ্গাল মে দুর্গাপূজা করনে নেহি দেতা হে। আজ তাদের মুখে কোনও কথা নেই। পুজোর সঙ্গে একটা বিরাট অর্থনীতি জড়িয়ে থাকে।
আরও পড়ুন-শিক্ষক নিয়োগে বারবার মামলায় প্রকাশ্যেই অসন্তোষ বিচারপতিদের
গান্ধীজিকে অসুর বানানো চূড়ান্ত অসম্মান : চরম বিরক্তি প্রকাশ করে নেত্রী বলেন, আগে বিজেপি নেতারা বাংলায় এসে বলতেন, মমতাজি দুর্গাপূজা নেহি করনে দেতা। আর এখন তাঁদেরই শাখা সংগঠনের পুজোয় দেশের নেতাকে দুর্গার অসুর করা হয়েছে। এই বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, বিষয়টি নজরে আসতেই পুলিশ অসুরের মূর্তি পরিবর্তন করে দেয়। এই অসম্মানের জবাব দেবে জনতা। জনতার আদালতে ওদের কানমলা খেতে হবে।
সম্প্রীতির বাংলা : এদিনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় সম্প্রীতির বাতাবরণ করা হয়। যে রেড রোডে বিসর্জনের কার্নিভাল হয়, সেখানেই ইদের নমাজ পড়া হয়। এই উদাহরণ কোথাও নেই।
ছেলেবেলার কথা : বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এদিন খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নেত্রী। তাঁর কথায়, ছোটবেলায় গান শিখতাম। আধুনিক, খেয়াল সবই শিখেছি। এখনও সেখানে থেকেই গুনগুন করি। তবে নাচ শেখা হয়নি।
কালীপুজো-দীপাবলি : একই সঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিসর্জনের কার্নিভালে শুধু কলকাতার দুর্গাপুজো কমিটিদেরই ডাকা হয়। তাতেই ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। আর অন্যান্য জেলাকে ডাকলে ওটা ১০ ঘণ্টা সময় লাগবে। কালীপুজো-দীপাবলি সাবধানে পালন করার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নিজের আনন্দ যেন অন্যের অসুবিধার কারণ না হয়। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে এদিন গান করেন বাবুল সুপ্রিয়। তার আগে গান করেন ইন্দ্রনীল সেন। উত্তীর্ণয় ছিল উপচে পড়া ভিড়। ছিলেন ভবানীপুরের জনপ্রতিনিধি-সহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।