প্রতিবেদন : কোভিডবিধি মেনে হবে দুর্গাপুজো। উদ্যোক্তাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। “নিশ্চিন্তে পুজো করুন।” মঙ্গলবার, বিকেলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে গাইডলাইন নিয়ে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবারের মতো এবারও করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো করতে উদ্যোক্তাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে কড়া নজর মুখ্যমন্ত্রীর। বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, কলকাতা ও পুলিশ রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি এবং পুজো উদ্যোক্তারা। নির্বাচনী বিধি মেনে কোনও ঘোষণা করেননি বা প্রতিশ্রুতি দেননি মুখ্যমন্ত্রী।
তবে, এবারও দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে পিছু ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য। বৈঠকে উদ্যোক্তাদের জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কয়েক বছর পুজো কমিটিগুলি অনুদান দিচ্ছে রাজ্য। করোনাকালে কত বছর ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যসচিব জানান, এবারও তা বহাল থাকছে। নির্বাচনী বিধি মেনে এদিন এবিষয়ে কোনও ঘোষণা করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
রাত জেগে পুজো দেখা দুর্গোৎসবের একটা অঙ্গ। তবে, এবার রাতে পুজো দেখার অনুমতি থাকবে কি না সে বিষয়টি উপনির্বাচনের পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কলকাতায় আড়াই হাজার, সারা রাজ্যে মোট 36 হাজার ক্লাবের কোনও অসুবিধে হবে না। ক্লাব চত্বরে স্যানিটাইজার করতে হবে। বিভিন্ন সংস্থা মাস্ক বিলি করতে পারেন। বড় ক্লাবগুলিকে ছোট ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিসর্জনের দিনক্ষণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৫ অক্টোবর দশমী থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত হবে বিসর্জন। ১৮ তারিখ হতে পারে কার্নিভাল। এখন রেড রোডের বিসর্জনের কার্নিভালও একটা বড় আকর্ষণ। অনেক বিদেশী পর্যটকও সেটা দেখতে আসেন। করোনা আবহে গত বছর সেই কার্নিভাল করা যায়নি। এবার সেটা হবে কি না- তা কোভিড পরিস্থিতি দেখে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : কৃষ্ণনগরে ৭১ কোটি টাকায় পানীয় জল প্রকল্প
মুখ্যমন্ত্রী জানান, আইআইটি খড়গপুর, ব্রিটিশ ইনস্টিটিউট-সহ তিনটি সংস্থার পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দুর্গা উৎসব ঘিরে ৩২,৩৭৭ কোটি টাকা খরচ হয়। দুর্গাপুজোকে ঐতিহ্যশালী আন্তর্জাতিক উৎসবের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য UNESCO-র কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
মততা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধর্ম যার যার নিজের, উৎসব সবার।শান্তি-সভ্যতা-সংস্কৃতি মেনে দুর্গাপুজো করতে হবে। অশান্তি, প্ররোচনা যেন পুজোতে যেন বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, এদিকে নজর রাখতে হবে।” বক্তব্যের শেষে চণ্ডীপাঠ করে সবার জন্য প্রার্থনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সবাইকে জানান, “শুভ পুজো”।
আরও পড়ুন :তৃণমূল প্রধান বাবার উপর আক্রমণ, মৃত ছেলে
হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান গত কয়েক বছরের মতো এবারও দমকল বা কলকাতা পুরসভা ও অন্যান্য পুর কর্তৃপক্ষ ও পঞ্চায়েতগুলি তাদের পরিষেবার জন্য কোনও অর্থ নেবে না। পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুৎ পরিষেবার খরচের ক্ষেত্রেও অর্ধেক ছাড় দেওয়ার কথাও জানান মুখ্যসচিব।