রেকর্ড বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহানগর: নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা-ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

Must read

অস্বাভাবিক মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতা। সোমবার রাতভর রেকর্ড বৃষ্টিতে মহানগর-সহ আশপাশের এলাকা জলমগ্ন। এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনকে কড়া নজরদারি ও দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে দ্রুত আর্থিক সাহায্য ও সহায়তা দেওয়া হবে। নিহতদের পরিজনদের জন্য কর্মসংস্থানের আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata banerjee)।

মুখ্যমন্ত্রীর  (Mamata banerjee) নির্দেশে ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা দফতর কলকাতার সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অফিসযাত্রীদেরও বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “মানুষের জীবন সবার আগে। কাজকর্ম পরে হবে, কিন্তু বিপদের মুখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।”

এই দুর্যোগের মাঝেই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। সিইএসসি-র ভূমিকা নিয়ে তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, “মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না। সিইএসসি-র কর্তাদের অবিলম্বে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। বিদ্যুতের তার ও ট্রান্সফরমারগুলি দ্রুত মেরামত করতে হবে। যাতে আর কোনও বিপদ না ঘটে।”

নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, পুলিশ, দমকল ও বিদ্যুৎ দপ্তরের জরুরি টিম ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করেছে। জলমগ্ন রাস্তায় পাম্প বসিয়ে জল নামানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে বিপর্যস্ত পরিবারগুলিকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজও চলছে।

আরও পড়ুন-CESC-কে মৃত্যুর দায় নিয়ে পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে হবে, তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, এই অস্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সরকার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের পাশে থাকাই এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। “আমি মেয়র, মুখ্যসচিব এবং পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে একটানা যোগাযোগ রাখছি। ফরাক্কায় সঠিকভাবে ড্রেজিং করা হয় না, তাই বৃষ্টি হলেই বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মুম্বই বা দিল্লিতে জল জমে। এবারের বৃষ্টিটা একেবারেই অস্বাভাবিক, অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। আমি ২-৩দিন ধরেই সতর্ক করছি। এরকম বৃষ্টি আমরা কখনও দেখিনি। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আমি ভীষণ দুঃখিত। আজ স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছি, অফিসযাত্রীদেরও কাজে না যাওয়ার জন্য বলেছি। কালও অফিসে না যাওয়াই ভালো।”

মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেন, আবার বান আসছে। আরও জল জমবে। গঙ্গায় মহালয়া থেকে জোয়ার চলছে। জল যাওয়ার আর কোনও জায়গা নেই, শেষমেশ সেটা আবার গঙ্গাতেই বার করতে হবে। বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা জলে চারপাশ ভরে আছে। আমি বেসরকারি কর্মীদেরও কাজে না যেতে অনুরোধ করছি—দুর্যোগ সবার উপর সমানভাবে প্রভাব ফেলে। উপরন্তু কেন্দ্র জিএসটি-র টাকা কেটে নিয়েছে, আমাদের সব ফান্ড এখন এই দুর্যোগ সামলাতেই যাচ্ছে।”

প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “এত কম সময়ে এত প্রবল বৃষ্টি আগে দেখা যায়নি। তবু মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতি নজরে রাখছেন। সমস্ত দফতরকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় কাজ করতে বলা হয়েছে।”

Latest article