নিরাপত্তা ও সুবিধা বাড়িয়ে ডাক্তারদের সভায় অভিভাবকের ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রী

বিদেশ যাবেন না, বাংলায় থাকুন, আপনারাই তো বিশ্বমানের

Must read

প্রতিবেদন : নিরাপত্তা বাড়ানো থেকে সর্বস্তরের ডাক্তারদের বেতন বৃদ্ধি। পরিকাঠামো থেকে বিনোদন-খেলাধুলো। তাঁদের প্রথম সভাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata Banerjee) অভিভাবকের ভূমিকায় পেলেন রাজ্যের সর্বস্তরের চিকিৎসকেরা। তাঁর মা মাটি মানুষের সরকার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় ও পরিকাঠামগত উন্নয়নে কী কাজ করেছে সবিস্তারে তার বর্ণনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন চিকিৎসকদের জন্য একের পর এক বড় ঘোষণা করেছেন তিনি। ইন্টার্ন, হাউসস্টাফ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি, পোস্ট ডক্টরেট ট্রেনি— সবার বেতন ১০,০০০ টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে। রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ১৫ হাজার টাকা করে বেতন বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘোষণার পরে উপচে পড়া প্রেক্ষাগৃহে হাততালির ঝড় ওঠে৷ একই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবায় চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিভা নিয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন তাঁদের। অনুরোধ করেন আপনারা বিদেশ যাবেন না। বাংলায় থাকুন। আপনারই তো বিশ্বমানের চিকিৎসক। সোমবার কলকাতার ধনধান্য স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও সংগঠনের সর্বস্তরের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিষেবায় সংযুক্ত সকলেই। মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) বলেন, বছরে একবার এই ধরনের সম্মেলন হলে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও নিবিড় হয়৷

এদিন প্রথমেই মঞ্চ থেকে মনে করালেন, তিলোত্তমার শাস্তির দাবিতে তিনি নিজে রাস্তায় হেঁটেছিলেন। এমনকী ‘অপরাজিতা বিল’ও এনেছেন, যা এখনও পড়ে রয়েছে। তিলোত্তমার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে নিজের বক্তব্য শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাম আমলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে অবহেলা করা হয়েছে। একজন রাজ্যমন্ত্রী ওই দফতর দেখতেন। তাই টিমটিম করে চলত সব কিছু। আমি নিজের হাতে দফতরটা রেখেছি, কারণ একজন রাজ্যমন্ত্রীর পক্ষে এটা দেখা সম্ভব নয়। বামফ্রন্ট আমলে চিকিৎসার অবহেলা হত। এই বিষয়টা সামগ্রিক ভাবে নজর রাখতে হয়, দেখতে হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজারটা ভাল করলেও বেরোবে না। একটা খারাপ কাজ করলে এমন প্রচার হয়, যাতে মনে হয় স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কেউ কোনও কাজ করছেন না। চিকিৎসক মানে সেবা-নিষ্ঠা-জ্ঞান-মানবতা-সমবেদনা। আজকাল ফেক ওষুধও বেরিয়ে গেছে। মানুষের লোভ এত বেড়ে গেছে, একটা ভাল কাজকে খারাপ করে দিতে এক সেকেন্ড লাগে। আপনারা ছিলেন বলেই আজ এত ভাল সব কিছু হয়েছে। আমি আগে যেতাম পিজি, শম্ভুনাথ, মেডিক্যাল কলেজ— এইসব সরকারি হাসপাতালে। সব জায়গায় ছোট্ট ছোট্ট গেট ছিল। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বেরোনোর উপায় নেই। আমরা তখনই গেটগুলো আগে বড় করি, হাসপাতাল রং করি, নাইট শেল্টারের ব্যবস্থা করি। আগে দেখতে ভাল হওয়া দরকার, তার পরে গুণ বিচার করা হবে।
এদিনের সভার ক্যাচলাইন ছিল ‘চিকিৎসার আরেক নাম সেবা’৷ সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, ডিজি রাজীব কুমার, সিপি মনোজ ভার্মা-সহ ডাক্তারদের গ্রিভান্স সেলের কর্মকর্তারা৷

বাড়ল বেতন
ইন্টার্ন, হাউস স্টাফ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিদের বেতন বাড়ল ১০ হাজার
সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বেতন বাড়ল ১৫ হাজার
ডিপ্লোমা সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৬৫ হাজার থেকে বেড়ে হল ৮০ হাজার
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৭০ হাজার থেকে বেড়ে হল ৮৫ হাজার
পোস্ট ডক্টরেট সিনিয়রদের বেতন ৭৫ থেকে বেড়ে হল ১ লক্ষ

আরও পড়ুন- দুই ভাই মিলেই কি খুনের ছক?

Latest article