প্রতিবেদন: মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী বিজয় শাহকে অপসারণের দাবি জানাল সেনা অফিসার কর্নেল সোফিয়ার পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীরও। বিহিত চেয়েছেন কর্নেল সোফিয়াকে নিয়ে গেরুয়া মন্ত্রীর কুরুচিকর মন্তব্যের। প্রশ্ন তুলেছেন, এরপরেও মন্ত্রীর পদ থেকে কেন সরানো হয়নি ওই বিজেপি নেতাকে? সোফিয়ার ভাই বান্টি সুলেমানের মন্তব্য, সোফিয়া শুধুমাত্র আমাদের পরিবারের কন্যা নয়, ও দেশের কন্যা, ভারতীয় সেনার কন্যা। ও দেশের জন্যই বাঁচে। মন্ত্রী বিজয় শাহের মন্তব্যের কোনও ক্ষমা হয় না। মধ্যপ্রদেশের ছতরপুরের বাসিন্দা সোফিয়ার ভাইয়ের দাবি, ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ করুন প্রধানমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের মন্ত্রীর এই কুমন্তব্যে গভীর অস্বস্তিতে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। অবস্থা সামাল দিতে স্থানীয় নেতারা ছুটছেন কর্নেল সোফিয়ার আত্মীয়দের কাছে। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় সোফিয়ার পরিবার। সরাতেই হবে ওই মন্ত্রীকে। এদিকে বিজেপির মন্ত্রী বিজয় শাহের বক্তব্যের নিন্দা করতে গিয়ে উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেছেন উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির প্রবীণ সাংসদ রামগোপাল যাদব। ব্যোমিকা সিংয়ের জাত উল্লেখ করে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, ওদের এক মন্ত্রী কর্নেল কুরেশিকে অপমান করেছেন। কিন্তু তিনি জানতেন না ব্যোমিকা সিং কে। এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী কে। যদি জানতেন, তাঁরাও রেহাই পেতেন না। তাঁর বক্তব্য, ব্যোমিকা হলেন হরিয়ানার জাটভ সম্প্রদায়ের। এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী বিহারের যাদব। সোফিয়া মুসলিম। তিনজনই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতিনিধি। রামগোপালের এই মন্তব্যই উসকে দিয়েছে নতুন বিতর্ক।
আরও পড়ুন-গরমের যত্ন-আত্তি
লক্ষণীয়, কয়েকদিন আগে মধ্যপ্রদেশের ওই গেরুয়া মন্ত্রী সোফিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ওঠে ব্যাপক বিতর্কের ঝড়। দেশজুড়ে ওঠে নিন্দার ঝড়ও। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করে পুলিশকে মামলা করার নির্দেশ দেয় মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত মন্ত্রী। কিন্তু তাঁর মন্তব্যের জন্য তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার যে নির্দেশ দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তাতে স্থগিতাদেশেরও আর্জিও খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টে গিয়ে মন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। তাঁর মন্তব্য, এটা কী ধরনের কথা। মন্ত্রী হিসেবে আপনার আর একটু সংবেদনশীলতা দেখানো উচিত ছিল। এখানেই শেষ নয়, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তীব্র ভর্ৎসনা করে সে রাজ্যের পুলিশকেও। উল্লেখ্য, কর্নেল সোফিয়াকে নিয়ে গেরুয়া মন্ত্রীর কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে প্রথম সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেসই। পরে সোচ্চার হয় অন্য বিরোধী দলগুলোও।