প্রতিবেদন : এসআইআরের আগেই বিজেপি আর কমিশনের বিরাট কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একের পর এক তথ্য তুলে নিয়ে দেখালেন, এসআইআরের আগেই আর-এক বিরাট কেলেঙ্কারি হয়ে গিয়েছে রাজ্যের ভোটার তালিকায়। ২০০২-এর ভোটার তালিকাকে বেঞ্চমার্ক করে এসআইআর করার কথা বলেছে কমিশন। কিন্তু আপ লোড করা ভোটার তালিকা আর ২০০২ -এর হার্ড কপি মেলাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে আসমান-জমিন ফারাক। অসংখ্য নাম বাদ। যেমন, অশোকনগরে একটি বুথের ভোটার তালিকাই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে! কোচবিহার বা মাথাভাঙায় সিরিয়াল নম্বর ধরে ৫০০-র বেশি ভোটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, মাঝেরবাড়ির বিএলও-র বাবা-মায়ের নামই বাদ দেওয়া হয়েছে! কেন, কীভাবে, কী কারণে এই নামগুলি বাদ গেল তার উত্তর দিতে হবে কমিশনকেই। জবাব দিতে হবে বিজেপিকেই।
আরও পড়ুন-পার্ক স্ট্রিট হত্যাকাণ্ডে দুই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কমিশনকে নিশানা করে কুণাল বলেন, এসআইআরের নামে এরা চুপি-চুপি কারচুপি করছে। সাইলেন্ট রিগিং চলছে। এর পরেই নথি হাতে একের পর এক প্রমাণ দাখিল করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর বিধানসভা এলাকার গুমায়। কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখাচ্ছে গুমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে, হাবড়া-২ ব্লকে ১৫৯ নম্বর বুথে কোনও ভোটারই নেই। অথচ ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে সেখানে প্রায় ৯০০ ভোটারের নাম ছিল। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির মদতে পরিকল্পিতভাবে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। কুণালের অভিযোগ, বিজেপির অফিসে বসেই এইসব নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, কমিশন শুধু সেটাই আপলোড করেছে। তা না হলে এসআইআরের আগেই বিজেপি নেতারা কীভাবে বলে দিচ্ছেন, এত নাম বাদ যাবে? একইভাবে কোচবিহারে কোনও বুথে ৪০০ জনের নাম বাদ গিয়েছে। ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ৭১৭ জনের নাম ছিল, এখন আছে মাত্র ১৪০ জন। এতজন তো একসঙ্গে মারা যেতে পারে না! এসআইআরের আগেই নাম কীভাবে উধাও হচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল মুখপাত্র।
আরও পড়ুন-মুম্বইয়ের স্টুডিওতে ১৭ শিশুর অপহরণকারী নিহত
সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক তথ্য তুলে ধরেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এর পরে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সাফ জানান, একজন বৈধ ভোটারের নামও বাদ দিতে দেব না। ইতিমধ্যেই কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। প্রতিটি বুথে, প্রতিটি বাড়িতে নজর রাখুন— পুরনো লিস্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্লক ধরে ধরে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে।
চন্দ্রিমার কথায়, ভোটার তালিকায় যেভাবে কারচুপি হচ্ছে তাতে বিজেপির মধ্যেও ঝামেলা শুরু হয়েছে বলে খবর। কারণ, এ-সব করতে গিয়ে কিছু নিজেদের লোকের নামও বাদ দিয়ে ফেলেছে ওরা! আর এখন ফেঁসে গিয়ে বলছে, কমিশনের ওয়েবসাইট নাকি ক্র্যাশ করেছে। আমরা পুরো ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

