অলোক সরকার
ভারতীয় দল ইডেন ছেড়ে যাওয়ার পর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এলেন। সোজা চলে গেলেন পিচের উপর। পুরোনো অভ্যাসে টিপে দেখলেন বাইশ গজ। হয়তো বোঝার চেষ্টা করলেন এত কথা কীসের জন্য! পিচের উপর যেটুকু ঘাস ছিল সেটাও চেঁচে সাফ করে দিয়েছেন মাঠ কর্মীরা। এখন এটা টিপিক্যাল টেস্ট ম্যাচ পিচ।
সৌরভকে দেখে পিচের উপর চলে এলেন টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ও সৌরভের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা হল। বাভুমা একটু আগে বলে গিয়েছেন এটা বেশ ভাল পিচ। সৌরভকেও কি সেটাই বললেন? কে জানে! আসলে ভারতীয় দল পাঁচ দিন আগে কলকাতায় এসে পিচ নিয়ে আবদারে-আবদারে সিএবিকে নাজেহাল করে ছেড়েছে। এমনকী এদিন গম্ভীররা হোটেলে চলে যাওয়ার পরও ভারতীয় দলের প্র্যাকটিস জার্সিতে থাকা এক টিম স্টাফকে দৌড়ে এসে সৌরভকে ফোন ধরাতে দেখা গেল। কে ছিলেন ফোনের ওপারে? কে জানে!
ভারত শেষবার ইডেনে টেস্ট খেলেছে ছ-বছর আগে। তখন বাংলাদেশ, এখন দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। শুভমনদের কথাবার্তায় তাই সমীহ ঝরে পড়ছে। উপায়ও নেই। বাভুমার এই দলের ব্যাটিং, বোলিং অসাধারণ। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাভুমার তিন স্পিনার হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। দলে মার্করাম, ব্রেভিস, স্টাবস, রিকেলটন, বাভুমার মতো ব্যাটার রয়েছেন। করভিন বশ, মার্কো জেনসেনের মতো অলরাউন্ডার। সঙ্গে রাবাডার মতো ডাকসাইটে সিমার। এর সঙ্গে ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দেওয়া তিন স্পিনার কেশব মহারাজ, সেনুরুন মুথুস্বামী ও সাইমন হার্মার। যারা এখন ব্যাটারদের ত্রাস।
সকালে ভারতীয় দল প্র্যাকটিসে এল যশস্বীদের ছাড়াই। টেস্টের আগের দিন পুরো দলের একসঙ্গে প্র্যাকটিস না করা দস্তুর এখন। দুপুরে বাভুমারাও এলেন ভাঙা দল নিয়ে। গম্ভীর অবশ্য আগের দিনের মতো এদিন আর পিচ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেননি। তাঁর অধিনায়ক আবার মিডিয়াকে বলে গেলেন এই পিচকে তিনি বুঝে উঠতে পারেননি! একেকদিন একেকরকম দেখছেন। ফলে অক্ষর নন, কুলদীপই যে খেলবেন সেটা জোর দিয়ে বলে যেতে পারলেন না।
শুভমনদের জন্য একের পর এক চ্যালেঞ্জ রয়েছে এই সিরিজে। যেমন তাঁরা সাদা বল থেকে লাল বলে এলেন। টি ২০, ওডিআই থেকে সোজা এবার ঝাঁপ মেরেছেন টেস্ট ক্রিকেটে। অধিনায়ক বলছিলেন, সেই এশিয়া কাপ থেকে দৌড়ঝাঁপ চলছে। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটার হিসাবে এসব মানিয়ে নিতেই হবে। তবে তিনি আশায় আছেন বল রিভার্স করবে এখানে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে যে বল ঘুরবে ধরে নিয়ে বুমরা ও সিরাজ ছাড়া বাড়তি সিমারে যেতে পারছেন না তাঁরা। তৃতীয় সিমার যিনি হতে পারতেন সেই নীতীশকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে শুভমন বলছিলেন ভারতে বেশিরভাগ ম্যাচের ফয়সালা হয় স্পিনারদের হাতে। যার হাতে যত ভাল স্পিনার, তার জেতার সম্ভাবনা তত বেশি। কিন্তু এখানে সকালে বল মুভ করে, বিকেলে তাড়াতাড়ি আলো কমে আসে। ফলে এসবও মাথায় রাখতে হচ্ছে। এদিন শুভমনকে আলাদা করে স্পিনের সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখা গেল। অক্ষর আর জাদেজার সঙ্গে একজন নেট বোলার। নেটের পিছনে দাঁড়িয়ে সেটা দেখলেন গম্ভীর। এভাবে প্রায় ঘণ্টাখানেক চলল। বোঝা যাচ্ছে ঘুরেফিরে সেই স্পিনই ছেয়ে রয়েছে বাইশ গজে।
আরও পড়ুন-আই লিগ নিয়ে আশ্বাস ক্রীড়ামন্ত্রীর, ক্লাবদের সঙ্গে মঙ্গলে বৈঠক

