প্রতিবেদন: বিজেপি রাজ্যে জাতপাতের বিদ্বেষ কোন মাত্রায় পৌঁছেছে তার প্রমাণ মিলল আবার। উচ্চবর্ণের পরিবারের মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করার‘অপরাধে’ জীবন দিতে হল দলিত যুবককে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে মারল তাঁকে। অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে। হারসি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নিজের বাড়িতে বাবা-মাকে দেখতে এসে গত ১৯ অগাস্ট আক্রান্ত হন ওমপ্রকাশ। স্ত্রী শিবানীর বাড়ির লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে তারা। ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে লাঠি-লোহার রড দিয়ে পেটানো হয় তাঁকে। বাধা দিতে গিয়ে জখম হন স্ত্রী শিবানীও। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় গোয়ালিয়রের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওমপ্রকাশকে। সোমবার সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধিক্কার উঠেছে রাজ্যজুড়ে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য বিজেপির জাতপাতের রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন রাজ্যের মানুষ। লক্ষণীয়, উচ্চবর্ণের মেয়েকে বিয়ে করার জন্য এর আগে ওমপ্রকাশকে ৫১,০০০ টাকা জরিমানাও করেছিল হারসি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাঁর পরিবারকে বয়কট করারও হুলিয়া জারি করেছিল। শিবানীর বাবা শাসানি দিয়ে বলেছিল, ওমপ্রকাশ যেন গ্রামে আর পা না রাখে।
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যের বনতারায় সিট গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট
পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও বাড়ি থেকে পালিয়ে শিবানীকে বিয়ে করেছিলেন ওমপ্রকাশ। শিবানীর বাড়ি থেকে অভিযোগও দায়ের করা হয় থানায়। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক শিবানী স্বামীর সঙ্গেই ঘর ছাড়েন। ছাড়েন গ্রামও। কখনও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায়, কখনও উত্তরপ্রদেশে ঘর বাঁধেন নবদম্পতি। রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেও হুমকি থেকে রেহাই পাননি ওমপ্রকাশ। তবুও নিজের বাবা-মাকে দেখতে ১৯ অগাস্ট নিজের গ্রামে এসেছিলেন ওমপ্রকাশ। বাড়িতে পালন করতে এসেছিলেন রাখীবন্ধন উৎসব। সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শিবানীর বাবা এবং তার পেটোয়া লোকজন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, একজন অভিযুক্তকেও এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। শুধুই ১২ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে আপাতত দায় সেরেছে পুলিশ।